স্টাফ রিপোর্টার: সুড়ঙ্গ যেন যুদ্ধক্ষেত্র। রাত জেগে দু’শো কর্মী কাজ করে চলেছেন। দাঁড়িয়ে রয়েছে টিবিএম। পাঁচ বিদেশির উপর ভরসা রেখেই বউবাজারের বিপর্যয় সামলাতে চাইছে কেএমআরসিএল। হংকং থেকে এসেছেন জন এনরিকর্দ। ইনি মাটি বিশেষজ্ঞ। আরও এক মাটি বিশেষজ্ঞ ডা. পিছুমনিও রয়েছেন সেই দলে। এসেছেন সিঙ্গাপুরের সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ জে ব্রিজ ক্রিস্টোফার, জন ইন্ডিকোট এবং পল ভেরল। এই পঞ্চপাণ্ডবই এখন পূর্ব-পশ্চিমের ভাগ্য গড়ে দেবে। কারণ, বুধবার বিকেলেও কেএমআরসিএলের আধিকারিকরা বলতে পারেননি, ঠিক কতক্ষণে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে। কতক্ষণে বলা যাবে, আর কোনও বাড়িতে ফাটল দেখা দেবে না। সুড়ঙ্গের অসুখই বা সারবে কবে!
বুধবার সকালেই এই পাঁচ বিদেশি সুড়ঙ্গের এলাকা ঘুরে দেখেছেন। পরীক্ষা করে দেখেন, টানেল খোঁড়ার আগে সেখানে কীভাবে মাটি-সহ অন্যান্য পরীক্ষা করা হয়েছিল। তারপরও কেন এই ধস নামল। আগামিদিনে ফাটল ধরা বাড়িগুলিকে নিয়ে কী করা যায় ইত্যাদি। টানেলের মাটি কী অবস্থায় রয়েছে তা পরীক্ষা করে কেএমআরসিএলকে জানাবেন তাঁরা। এদিকে বুধবার রাত থেকে টানেলের মধ্যে জল ভরার কাজ শুরু হয়েছে। এই জল গিয়ে পালটা চাপ সৃষ্টি করে মাটির জল আটকে দেবে। বাইরে থেকে পাম্প করে সেই জল ভরার কাজ শুরু হয়। মাটির উপর থেকে সুড়ঙ্গে গ্রাউটিং করা চলেছে। এদিনও সিমেন্ট আর রাসায়নিক দেওয়া হয়েছে হেট অ্যান্ড মেশিনের সাহায্যে। আর সুড়ঙ্গে পাঁচিল তুলেই জল আটকানো হয়েছে যাতে জল আর ছড়িয়ে পড়ে মাটি আলগা করতে না পারে।
গ্রাউটিংয়ের কাজের মধ্যেই কোথাও কোথাও ফাঁক থেকে যাচ্ছে সুড়ঙ্গে। সিমেন্টিং হচ্ছে না। সেখানেও যাতে কোনও ফাঁক না থাকে তাই পাম্পের সাহায্যে পালটা জল দেওয়া হচ্ছে। জলের চাপে ভূমিক্ষয় রোধ করার কাজ শুরু এদিন করেন ইঞ্জিনিয়ররা। তবে বুধবার সকাল থেকেই পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। তবে গ্রাউটিংয়ের ফলে সেখানে থাকা টিবিএমটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সত্তর কোটি টাকার এই মেশিন দিয়ে হয়তো আর সুড়ঙ্গ কাটা না-ও যেতে পারে। এদিকে সুড়ঙ্গের ভিতর দু’টি পাঁচিল তৈরি হয়েছে। যাতে জল আর ছড়িয়ে পড়ে মাটি আলগা করতে না পারে। কয়েকশো বালির বস্তা দিয়ে সুড়ঙ্গের মধ্যে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে। এসপ্ল্যানেড দিয়ে সুড়ঙ্গে ঢুকছেন মেট্রোর কর্মীরা। চলছে দফায় দফায় বৈঠক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.