ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাফিলতির অভিযোগে থানায় এফআইআর দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। তার ভিত্তিতে ঘটনার দু’দিনের মধ্যেই পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনে দুর্ঘটনায় যাত্রীমৃত্যুতে সর্বোচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু করল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সোমবার শহরে এসে পার্ক স্ট্রিট ও টালিগঞ্জ স্টেশন পরিদর্শন করলেন কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। খতিয়ে দেখলেন অভিশপ্ত রেকটিও। দফায় দফায় বৈঠক করলেন মেট্রো আধিকারিকদের সঙ্গে।
একবার নয়, একটি-একটি স্টেশনে দু’বার, এমনকী তিনবারও কামরার দরজা খুলছে আর বন্ধ হচ্ছে। দিনের ব্যস্ত সময়ে মেট্রো সফরে হামেশাই এমন ঘটনার সাক্ষী থাকতে হয় যাত্রীদের। কিন্তু শনিবার সন্ধে যখন কবি সুভাষগামী মেট্রোর দরজায় সজল কুমার কাঞ্জিলালের হাত আটকে গিয়েছিল, তখন কিন্তু কামরার দরজাটি খোলেনি৷ মেট্রোটি ওই অবস্থাতেই চলতে শুরু করেছিল৷ শেষপর্যন্ত চালক এমারজেন্সি ব্রেক কষায় শরীরের ভারসাম্য রাখতে না পেরে টানেলের ভিতর পড়ে যান সজল কাঞ্জিলাল। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের বক্তব্য, মেট্রোর থার্ড লাইনে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন বছর ষাটেকের ওই প্রৌঢ়।
পাতালপথে এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় মেট্রোর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, মেট্রোর দরজার সেন্সর ঠিকমতো কাজ না করার কারণে বেঘোরে মারা গেলেন মডেল, লিটল ম্যাগাজিন বিক্রেতা সজল কুমার কাঞ্জিলাল। মেট্রো আধিকারিকদের বক্তব্য, নতুন ‘মেধা’ রেকে প্রযুক্তিগত কারণে ২০ মিলিমিটারের বেশি পরিধি যুক্ত কিছু আটকালে তবে দরজা খোলে। সরু কিছু আটকালে চালক সিগন্যাল পেয়ে যাবেন। শনিবার সন্ধ্যায় সেই সিগন্যাল সম্ভবত ঠিকমতো কাজ না করায় এমন একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেল৷
এদিকে নয়া ‘মেধা’ রেকের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এমনকী, নতুন রেকগুলিকে কলকাতার মেট্রোর ট্রেন এগজামিনার বা টিএক্সআররা সবুজ সংকেত দিতে চাননি বলে খবর। মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, মোট পাঁচটি রেক এলেও তিনটি ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর দুটি রেক চালানো হচ্ছে। তার একটিতেই শনিবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। এদিকে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য মেট্রোয় চড়া ছাড়া গতি নেই। তবে শনিবারের দুর্ঘটনার পর রীতিমতো আতঙ্কে যাত্রীরা। সোমবার যেমন কালীঘাট স্টেশন থেকে মেট্রোয় ওঠার আগে কপালে হাত ঠেকিয়ে প্রণাম জানাতে দেখা গেল এক মহিলা যাত্রীকে! হয়তো প্রার্থনা করলেন, সকলে যেন মেট্রো সফর করতে পারেন নিরাপদেই৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.