নব্যেন্দু হাজরা: তরতাজা ঝকঝকে কামরার অভাব, বুড়ো লঝঝড়ে মেট্রো রেকের উপরেই ভরসা রাখছেন কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। আর তার জেরেই পাতাল আতঙ্কে ভুগছেন শহরের মানুষ।
এই সেদিনের কথা। মেট্রোর দরজার সেন্সর কাজ করেনি। দরজায় হাত আটকে পাতাল পথে মৃত্যু হয়েছে সজল কাঞ্জিলালের। তারপরই নতুন দু’টি মেধা রেককে বাতিল ঘোষণা করেছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। আর তাতেই হিতে বিপরীত হয়েছে। নোয়াপাড়া থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার পথে প্রত্যেক কাজের দিন ৩০০টি ট্রেন চালায় মেট্রো রেল। এখন দুটি নতুন রেক চলে যাওয়ায় সে ঘাটতি মিটবে কি করে? মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দুটি নতুন রেক বাতিল করার পর সে জায়গায় পুরনো এসি রেক চালানো হবে। পুরনো এসি রেকগুলি বয়সের ভারে দুর্বল। অনেক রেকের কামরায় ঝরনার মতো জল পরে। মাঝে মধ্যেই তা পাতাল পথে স্তব্ধ হয়ে যায়। ফলে পুরনো এই রেক নিয়ে তটস্থ মেট্রোর নিত্যযাত্রীরা। দৈনিক পরিষেবার জন্য এখন চলে ১৩টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রেন। রোজই অন্তত ৭টি পুরনো রেক ব্যবহার করতে হয়। যেগুলি প্রায়ই গোলযোগের শিকার হয়। এখন নতুন রেক ফেরত যাওয়াতে বাধ্য হয়েই আর বেশি সংখ্যায় বাতিল রেক।
নতুন মেধা রেক দু’টি রোজ ষোলোটি চলাচল করত। কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির সুপারিশ মেনেই তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রেটেড কোচ ফ্যাক্টরিতে বানানো হলেও আদতে এই রেক সরবরাহ করেছে হায়দরাবাদের মেধা সার্ভো ড্রাইভস প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। এমনিতেই নিয়ম মতো চলে না মেট্রো। প্রায় প্রতিদিনই এক দু’মিনিট লেট হয় কোনও না কোনও ট্রেন। ফলে অফিস টাইমে দমবন্ধ করা ভিড় হয় মেট্রোয়। মেট্রো আধিকারিকরা জানিয়েছেন, রোজ মেট্রোর সংখ্যা অটুট রাখতে গেলে মান্ধাতা আমলের নন এসি রেকও মাঝে মধ্যে চালাতে হবে। দুটি নতুন রেক বাতিল হয়ে যাওয়ায় যে রেকগুলি নামবে তাদের বয়স পঁচিশ বছর পেরিয়েছে। দীর্ঘ ব্যবহারে এই রেকগুলির এখন জরাজীর্ণ অবস্থা। চীন থেকে যতদিন না নতুন ডালিয়ান রেক আসছে ততদিন এভাবেই চলবে মেট্রো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.