Advertisement
Advertisement
পুজোয় বর্ষা

দেবীর ঘোটকে আগমন, বৃষ্টিতেই কি ছত্রভঙ্গ হবে এবারের পুজো?

একনজরে দেখে নিন বিশেষজ্ঞদের মতামত।

Meteorologist suspects South Bengal may drench by havoc rain this puja
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:August 29, 2019 8:52 am
  • Updated:August 29, 2019 8:52 am  

রিংকি দাস ভট্টাচার্য:  আগমন ঘোড়ার পিঠে। গমনও ঘোটকে সওয়ার হয়ে। এবারের পুজো মা দুর্গার আবাহন ও বিদায়ের এই সফরসূচি দেখে বুক দুরুদুরু আমজনতা থেকে শাস্ত্রবিদদের। কারণ? পঞ্জিকা অনুযায়ী, ঘোড়ার ক্ষুরে সব ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার কথা। আকাশের যা হাল, তা দেখে  আশঙ্কা আরও দানা বাঁধছে। শরতের শেষবেলায ধুন্ধুমার বৃষ্টি কি তাহলে ছারখার করে দেবে পুজোর আমেজ?

[আরও পড়ুন:  যুব মোর্চার রাজ্য কমিটিতে নেওয়া হল শঙ্কুদেব-সৌমিত্র-শুভ্রাংশুদের]

বস্তুত আবহাওয়াবিদরা এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তাঁদের কথায়, বর্ষা বিদায়ের একদম গায়ে গায়েই এবছর পুজোর নির্ঘণ্ট। দুর্গাপুজো শুরু হচ্ছে ৪ অক্টোবর। ওই দিন পঞ্চমী। দশমী ৮ অক্টোবর। এই সময়ে ঝেঁপে বৃষ্টি যে হবে না, তা বুক ঠুকে বলতে পারছে না আবহাওয়া দপ্তর। কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ থেকে বর্ষা বিদায় নেয় ১০ অক্টোবর। অর্থাৎ, পুজো এবার খাতায় কলমে বর্ষার মধ্যেই। উপরন্তু ইদানীং নিম্নচাপের দৌলতে বিদায়লগ্নেও আচমকা বর্ষা মারমুখী হয়ে উঠছে।

Advertisement

rainy-kolkata

আলিপুরের ধারণাকে জোরদার করছে গত কয়েক বছরে অক্টোবরের শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত ঘটে যাওয়া কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগের তালিকা। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর বর্ষা যখন বিদায় নিচ্ছে, তখনই হঠাৎ মূর্তিমান অসুরের মতো হাজির হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘ফাইলিন’। ওড়িশা তছনছ করে দিয়েছিল সেই ঘূর্ণিঝড়। তার প্রভাব পড়েছিল এ রাজ্যেও। পুজোর আনন্দ মাটি হয়ে গিয়েছিল। অতি প্রবল সেই ঘূর্ণিঝড়ের এক বছরের মাথায়, ২০১৪-র ঠিক একই সময়ে বিশাখাপত্তনম ও শ্রীকাকুলামের মাঝামাঝি জায়গায় আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদ’। ফাইলিনের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২১৫ কিলোমিটার। আর হুদহুদ হাজির হয়েছিল ১৯৫ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে। তার জেরেই এই দু’বছর ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয় ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলে। আবার গত বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে ১১ অক্টোবর ওড়িশা-অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়ে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় তিতলি। কিন্তু সে তাতে ক্লান্ত হয়নি। ‘ইউটার্ন’ নিয়ে ভয়ংকরী প্রজাপতি ঢুকে পড়ে পুজোর বাংলায়। ফলে ষষ্ঠী পর্যন্ত ভালই বৃষ্টি হয়েছিল কলকাতা-সহ দক্ষিণের জেলাগুলিতে।

[আরও পড়ুন: সফল অস্ত্রোপচার, চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠছেন অশোক ভট্টাচার্য]

এ বার তেমন কোনও বিপত্তি যে হবে না, পুজোর প্রায় এক মাস আগে দাঁড়িয়ে তা হলফ করে বলতে পারছে না আলিপুর। আর সেই আশঙ্কায় অনুঘটকের কাজ করছে একটি পরিসংখ্যান। হাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৫ অক্টোবর, (এবছর এই দিনে ষষ্ঠী)  কলকাতায় বৃষ্টি হয়েছিল ৯.৯ মিলিমিটার। ওই বছরই ৮ অক্টোবর (অর্থাৎ এ বছর দশমী) বৃষ্টি হয়েছিল ১৪.৮ মিমি। ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর শহর ভেসেছিল ১৬.১ মিমি বৃষ্টিতে। ২০১৫ এবং ২০১৮ সালে ওই দিনগুলোয় শুকনো ছিল শহর। তবে ২০১৬ সালের ৪-৮ অক্টোবর কমবেশি প্রায় রোজই বৃষ্টি হয়েছে মহানগরে। এই বিপর্যয়ের যে পুনরাবৃত্তি হবে না, তার কোনও ‘গ্যারান্টি’ দিতে পারছেন না হাওয়া অফিসের কর্তারা। বরং একান্তে কারও কারও হুঁশিয়ারি, শরতের নীল আকাশের নিচে দেবীর আবাহনের পরিবর্তে রেনকোট পরেই হয়তো কাটাতে হবে অষ্টমীর দুপুর।

একনজরে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা

১) বর্ষা বিদায়ের একেবারে গায়ে গায়ে পুজো। কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে এ রাজ্য থেকে বর্ষা বিদায় নেয় ১০ অক্টোবর। পুজো পড়ছে ৪-৮ অক্টোবর।

২) প্রায়ই দেখা যাচ্ছে নিম্নচাপের দৌলতে বিদায়লগ্নেও আচমকা বর্ষা চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।

৩) গত পাঁচ বছরের মধ্যে তিন বছরই পুজোর সময় ঘূর্ণিঝড়ের হানা।

৪) পরিসংখ্যান বলছে, ৪-৮ অক্টোবর প্রায় প্রতিবছরই কম-বেশি বৃষ্টি হয়েছে শহরে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement