রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: কখনও লুকোচুরি খেলা, কখনও ওয়ার্ডে দৌড়াদৌড়ি করে হুলস্থুল বাঁধানো, তো কখনও ছাদে উঠে কার্নিশে বসে পা দোলানো। কলকাতার COVID হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজে এখন করোনা চিকিৎসার চেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন এই রোগীকে নিয়ে নাজেহাল দশা ডাক্তার থেকে নার্স ও হাসপাতাল কর্মীদের। আলাদা করে এঁর দিকে নজর রাখতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন সকলে।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত সপ্তাহে বছর চৌত্রিশের এক যুবক করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য ভরতি হয়েছেন হাসপাতালে। সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকের আটতলায় রেখে তাঁর চিকিৎসা চলছে। একটু সুস্থ হয়ে ওঠার পর থেকেই ওই যুবকের কার্যকলাপে বোঝা যায়, তিনি মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ নন।
হাসপাতালের কর্মীরা জানাচ্ছেন, কখনও তিনি কম্বলমুড়ি দিয়ে গোটা ওয়ার্ডে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন, কখনও খাটের নিচে লুকিয়ে পড়ে ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছেন, তো কখনও আবার সকলের নজর এড়িয়ে সোজা ছাদে উঠে গিয়ে কার্নিশে বসে পড়ছেন। যে কোনও সময় ভয়ংকর বিপদ ঘটিয়ে ফেলতে পারেন, এমনই সব কাজ তিনি করে বেড়াচ্ছেন। ওই ওয়ার্ডে ভরতি অনেক মুমূর্ষু রোগীই। তাঁদের দেখভাল করার পাশাপাশি এই যুবককে সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগের সুরে জানাচ্ছেন কর্মীরা।
এহেন রোগীর খবর মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাসের কানেও পৌঁছেছে। তাঁর কথায়, ”ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। সেই চিকিৎসা চলছে তাঁর। মাঝে করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়ায় এখানে ভরতি করা হয়েছে। এখন উনি নতুন করে সকলের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।”
একেই করোনার চিকিৎসার জন্য গোটা হাসপাতালে বাড়তি কাজের চাপ। সংক্রমণ এড়াতে এবং রোগীদের সুস্থ করে তুলতে আলাদা করে তাঁদের প্রতি যত্ন নেওয়া আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার উপর এমন এক রোগীর আবির্ভাবে কার্যত নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে কর্মীদের। এই মুহূর্তে তাঁর প্রতি আলাদা করে নজর রাখাও সম্ভব হচ্ছে না। সবমিলিয়ে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভাবনার কেন্দ্রে এখন এই যুবকই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.