সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিকিৎসায় গাফিলতি, অকারণে লক্ষ লক্ষ টাকা বিল, অযথা একগাদা টেস্ট – স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগগুলি আসছিল অনেকদিন ধরেই। বিশেষ করে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে। সব অভিযোগের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেবা বিক্রি হয় না, সেকথা পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন টাউন হলে প্রথম থেকেই রণংদেহী মেজাজে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইঁট-কাঠের ব্যবসা আর জীবন বাঁচানো এক নয়। রাজ্য সরকার বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে অনেক সাহায্য দেয়। তাদেরও সহজে ও সুলভে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হবে। ১০০ শতাংশ লাভ করা যাবে না। অযথা বিল বাড়ানোর জন্য যথেচ্ছ টেস্ট দেওয়া যাবে না, বিনা কারণে আইসিইউ-তে রাখা যাবে না, ভেন্টিলেশনে দেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রোটোকল মানতে হবে। বিলের টাকা না মেটালে মৃতদেহ আটকে রাখা যাবে না। এবার থেকে সমস্ত হাসপাতালেই ই-প্রেসক্রিপশন ও ই-রেকর্ড বাধ্যতামূলক করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। থাকতে হবে হেল্প ডেস্ক ।
কড়া পাহাড়ায় আজ শুরু মাধ্যমিক
বুধবার টাউনহল যেন বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলির কাছে মাধ্যমিকের থেকেও কঠিন পরীক্ষাকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। বেলভিউ, অ্যাপোলো, সিএমআরআই, আমরি, মেডিকা, ফরটিস, কেপিসি থেকে জি ডি, রুবি, বিএম বিড়লা, আই এন সির মতো বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিতে পরিষেবা নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। জবাবে কেউ প্রোটোকলের দোহাই দিয়েছেন, কেউ নার্স ছেড়ে যাওয়ার অজুহাত দিয়েছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নবাণের সামনে কোনও অজুহাত ধোপে টেকেনি। শেষমেশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের পক্ষ থেকে। মোট ৯৪২টি হাসপাতালে সার্ভে করেছে রাজ্য সরকার। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে। সিমিআরআই-এর ঘটনা থেকে মেডিকা হাসপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা কিডনি পাচারচক্রের অভিযোগের এদিন কৈফিয়তও চান মুখ্যমন্ত্রী। এই রাজ্যে শিশু পাচার, কিডনি পাচার চক্রের মতো ঘটনা ঘটতে দেবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেন মমতা। অভিযোগ রাজ্যের বাইরে থেকেও আসছে। এসেছে বাংলাদেশ থেকেও। চিকিৎসার নামে বিল বেড়েই চলেছে বলে জানান মমতা।
নয়া মার্কিন ভিসা নীতি নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন মোদি
আগে দর্শনধারী, পরে গুণবিচারি। অপরিষ্কার হাসপাতাল থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে বলে জানিয়ে দেন মমতা। তিনি বলেন, অযথা মানুষের মধ্যে ভয়ের সৃষ্টি করা যাবে না। একরকম প্যাকেজ বলে রোগী ভর্তি করে পরে বিশেষ প্যাকেজের অজুহাতে বিল বাড়ানো যাবে না। বিলের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা রাখতে হবে। রোগী গেলে তাঁকে হাসিমুখে সেবা করা উচিত বলে জানান তিনি। এমার্জেন্সির রোগী ফেরত পাঠানো যাবে না। সেক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
৭০টি বেসরকারি হাসপাতালকে শোকজ করা হয়েছে। ৩৩টির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বেসরকারি ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরিষেবা ফেরাতে সরকারের তরফে হেলথ রেগুলেটরি কমিশন গঠন করা হবে। যেখানে সব পক্ষ থেকে প্রতিনিধি থাকবে। সমস্ত হাসপাতালের পারফরম্যান্স মনিটর করে প্রত্যেক মাসে মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেবে কমিশন। হাসপাতালগুলির অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে। ওষুধের দাম যাতে অতিরিক্ত না হয় তাতে স্বাস্থ্য দপ্তর নজর রাখবে। তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল অঙ্গাঙ্গিভাবে চলুক। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাতে বাংলাই হোক মডেল।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নিউটাউনের স্কুলে মেরামতি শুরু
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.