ফাইল ফটো
তরুণকান্তি দাস: জামাতের পাশে জামাত।দিল্লির নিজামুদ্দিনে তবলিঘি জামাতের সভা ফেরত সংগঠন সদস্য, যাঁরা রাজারহাট হজ হাউসে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন তাঁদের দেখভালের অনেকটাই হাতে তুলে নিয়েছেন এই বাংলার সংগঠন সদস্যরা। স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন তাঁরা। জনা বারো জামাত সদস্য দিনরাত পরিষেবা দিচ্ছেন। যাঁদের কেউ বসিরহাট, কেউ বারাসতের বাসিন্দা। তাঁদের জন্যই এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে প্রায় ৩৫০ জনের রান্না, খাওয়া-সহ সমস্ত কাজকর্ম অনেকটা সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে বলে খবর। তবে পুরো বন্দোবস্ত হয়েছে সরকারিভাবে। খরচ বহন করছে রাজ্যই। কিন্তু স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন জামাতের লোকজন।
এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তবলিঘি জামাতের এক নেতা, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের বাসিন্দা শেখ আবদুল গফফর বলেন, “আমরা চাই যাঁরা রয়েছেন এই সেন্টারে সকলেই ভাল থাকুন। তাঁরা আমাদের রাজ্যের অতিথি। সেই কথা মাথায় রেখেই কাজ করছি আমরা।” তবলিঘি মানে হল প্রচার। জামাত অর্থাৎ সমাবেশ। দিল্লির নিজামুদ্দিনে সংগঠনের প্রচার সমাবেশে যাওয়া কয়েকজনের করোনা ধরা পড়ে। তার জেরে দেশের যে সব রাজ্য থেকে সেখানে লোকজন গিয়েছিলেন তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই রাজ্য থেকেও কয়েকজন গিয়েছিলেন। আবার থাইল্যান্ড, মায়ানমার, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশ থেকেও অনেকে গিয়েছিলেন যাঁরা সমাবেশের পর এই বাংলায় পা রেখেছিলেন কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে দেশে ফেরার জন্য। সেই সংখ্যাটা হল ১০৮। এর সঙ্গে আছেন অসম, অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের ৯১ জন। এই বঙ্গের ১০৪ জনও ঠাঁই পেয়েছেন রাজারহাট সেন্টারে। যার দায়িত্ব বর্তেছে একজন ডব্লুবিসিএস অফিসার মহম্মদ নকির উপর। সাফাইকর্মী, রাঁধুনিরা সংক্রমণের ভয়ে কাজ করতে চাইছিলেন না বলে নকি সাহেব নিজেই ঘাঁটি গেড়েছেন এখানে। তার পরও সমস্যা পুরো মেটেনি।
সব মিলিয়ে প্রায় ৩০০ জনের রান্না করতে হচ্ছে প্রতিদিন। লোকবল কম বলেই পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছিল। যা মেটাতে মাঠে নামতে হয়েছে তবলিঘি জামাতের উত্তর ২৪ পরগনার সদস্যদের। মহম্মদ নকির বক্তব্য, “ওঁরা নিজেরাই কিছু কাজের দায়িত্ব নিয়েছেন। সরকারের তরফে পরিষেবায় কোনও ঘাটতি নেই। সাফাইকর্মী ১৫ জন, নিরাপত্তারক্ষী ১২ জন ও অন্য কর্মী কয়েকজন আছেন। তাঁরা খুবই সক্রিয়। স্বস্তির কথা হল, এখানকার কারও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েনি।” জামাতের নেতা শেখ আবদুল গফফর বলেন, “আসলে এখানকার বিদেশিদের নিয়ে ভাষার সমস্যা তো রয়েছে। তার উপর এতজনের খাবার তৈরি, বাজার করা, কুটনো বানানো খুব সহজ কাজ নয়। তাই আমরা নিজেরাই এগিয়ে এসেছি। বিদেশি বা ভিনরাজ্যের যাঁরা ভাষাগত সমস্যার কারণে কিছুটা অস্বস্তিতে ছিলেন তাঁরা আমাদের কাছে অনেকটাই সহজ হতে পারছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.