Advertisement
Advertisement
Medical Test

নজিরবিহীন, কলকাতায় প্রতিবন্ধী শংসাপত্রের জন্য ভিডিও কলেই হল মেডিক্যাল পরীক্ষা

মানবিকতার তাগিদে শিথিল হল সরকারি নিয়ম।

Kolkata news: Medical test for Disability Certificate done through video call by National Medical College Hospital amid pandemic | Sangbad Pratidin

ছবি: প্রতীকী।

Published by: Paramita Paul
  • Posted:November 18, 2020 9:59 am
  • Updated:November 18, 2020 10:00 am  

গৌতম ব্রহ্ম: বয়স দশ। ছটফটিয়ে খেলে বেড়ানোর শৈশব হুইলচেয়ারে বন্দি। কারণ একরত্তি শরীরে থাবা বসিয়েছে অতি বিরল রোগ স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রপি। যা কিনা দশ লক্ষের মধ্যে একজনের হয়। এবং রোগীর দেহে সামান্য সংক্রমণও প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। গোটা কোভিড পর্বে তাই একদিনও মেয়েকে বাড়ির বাইরে বের করেননি। কিন্তু প্রতিবন্ধী শংসাপত্র (Disability Certificate) করাতে এবার তো ওকে হাসপাতালে নিয়ে যেতেই হবে!

চিন্তায় ঘুম ছুটে গিয়েছিল বাঁশদ্রোণীর দেবাশিস ঘোষ ও মৌমিতা ঘোষের। ওঁদের একমাত্র মেয়ে দেবস্মিতা স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রপিতে আক্রান্ত। প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট ওকে যেতে হবে টালিগঞ্জের এমআর বাঙুর হাসপাতালে, যেখানে কি না কোভিডের চিকিৎসা চলছে! সাধারণ হাসপাতালই যার পক্ষে অতীব বিপজ্জনক, কোভিড (COVID-19) হাসপাতালে গিয়ে সে কীভাবে ডাক্তারবাবুদের সামনে গিয়ে নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার প্রমাণ দেবে?
তাহলে উপায়?

Advertisement

[আরও পড়ুন : মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরই শিক্ষক নিয়োগে তৎপরতা, তৈরি উচ্চপর্যায়ের কমিটি]

হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কলিংয়ের (Video Calling) মাধ্যমে মেয়ের ডাক্তারি পরীক্ষার কথা ভাবে ঘোষ দম্পতি। সেই মতো চিঠি লেখেন মুখ্যসচিবকে। অন্য দিকে বাঙুরের সুপার ডা. শিশির মণ্ডল বিষয়টি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (National Medical College Hospital)) সুপার তথা উপাধ্যক্ষ ডা. সন্দীপ ঘোষের গোচরে আনেন। কেননা দেবস্মিতার মেডিক্যাল টেস্ট নেওয়ার মতো কোনও নিউরো বিশেষজ্ঞ বাঙুরে নেই। ডাক্তারবাবুদের সঙ্গে কথা বলে সন্দীপবাবুও ভিডিও কলিংয়ের মাধ্যমে মেডিক্যাল টেস্টের অনুমতি চান স্বাস্থ্যভবনের কাছে।

সমবেত প্রয়াস ও সদিচ্ছার আঁচে প্রশাসনিক লাল ফিতের বরফ গলে। মানবিকতার তাগিদে শিথিল হয় সরকারি নিয়ম। ভিডিও কলিংয়ের মাধ্যমেই সম্প্রতি মেডিক্যাল টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে দেবস্মিতার। তৈরি হয়েছে নজির। প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট পেতে আমজনতাকে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হবে, এটাই দস্তুর। গড়ে মাস তিনেক সময় লাগে। সেখানে এত দ্রুত বিকল্প উপায়ে শংসাপত্রের পুনর্নবীকরণ হওয়ায় দেবস্মিতার পরিবার আপ্লুত।

[আরও পড়ুন : আসনরফা নিয়ে জোটের স্নায়ুযুদ্ধ জারি, বাম-কংগ্রেসের ম্যারাথন বৈঠকে প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা]

মৌমিতার কথায়, “অতি বিরল রোগে আক্রান্ত। প্রায় ১০০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধিকতাযুক্ত। নিজে বসতেও পারে না। ডিস্যাবিলিটি সার্টিফিকেটটা না হলে খুব সমস্যা হত।” অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুশি সন্দীপবাবুও। তিনি জানালেন, মার্চের আগে মাসে ৫০-৬০টি সার্টিফিকেট ইস্যু করা হত। কিন্তু কোভিড পর্বে সংখ্যাটা কমে তিরিশে দাঁড়ায়। আগে মাস তিনেক সময় লাগত, হয়রানি হত। এখন এক মাসেই মেডিক্যাল টেস্ট করিয়ে সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। ফলে জনসাধারণের অনেক সুবিধা হয়েছে।

তবে দেবস্মিতার মতো ঘটনা এই প্রথম। এই পথ অনুসরণ করে অতিবিরল রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ভিডিও কলের মাধ্যমে মেডিক্যাল টেস্টের ব্যবস্থা করা যেতেই পারে বলে মনে করছে চিকিৎসক ও প্রশাসনিক মহলের একাংশ। একই দাবি মৌমিতাদেবীদেরও। জানালেন, “কোভিড পর্বে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মানুষের একাংশের পক্ষে বাইরে যাওয়া বিপজ্জনক। সহানুভূতির সঙ্গে এঁদের দেখা উচিত। এই ব্যাপারে স্বাস্থ্যসচিবকেও চিঠি লিখেছি।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement