গৌতম ব্রহ্ম: এমার্জেন্সিতে ঢোকার মুখেই ঘটল কাণ্ডটা৷
এক প্রৌঢ় স্বাস্থ্যকর্মীকে সপাটে জড়িয়ে ধরলেন এক তরুণী৷ ভরিয়ে দিলেন চুম্বনে৷ তরুণীর পরণে হট প্যান্ট ও স্লিভলেস টপ৷ বয়স কুড়ির কাছাকাছি৷ পুলিশ-নিরাপত্তারক্ষী আপ্রাণ চেষ্টা করছেন ওই তরুণীকে ছাড়ানোর৷ কিন্তু, ওই সুন্দরী চুমু খেয়েই চলেছে প্রৌঢ়কে৷ আদর সহ্য হয়নি ষাট ছুঁইছুঁই স্বাস্থ্যকর্মীর৷ মূর্ছা গেলেন চুমুর ঘায়ে৷ ঘটনাস্থল পার্ক সার্কাসের কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল৷ রাত পৌনে তিনটে৷
এমার্জেন্সির বাইরে প্রবল চিল-চিৎকার৷ শোরগোল শুনে বাইরে বেরিয়ে আসেন ‘এমার্জেন্সি মেডিক্যাল অফিসার’ ডা. শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ৷ ডাক্তারকে দেখে ছুটে আসেন পুলিশের একজন সাব-ইন্সপেক্টর৷ জানান, “স্যার একটি মেয়ে মাতলামি করছে৷ মেডিক্যাল টেস্ট করে একটা রিপোর্ট করে দিন প্লিজ৷”
রাত-বিরেতে এমন ‘কেস’ আসেই ডাক্তারদের কাছে৷ বিশেষ করে জেলে আসামিকে ঢোকানোর আগে বা কাউকে গ্রেফতার করা আগে ‘ফিটনেস টেস্ট’ করানোটা নিয়ম৷ এক্ষেত্রেও ডাক্তারবাবু রোগীকে এমার্জেন্সিতে আনতে বলেন৷ এসআই তখন জোড়হাত করে বললেন, “এমার্জেন্সিতে আসার পথে ওই তরুণী এমন একটা কাণ্ড করল যে আর ওকে পুলিশ ভ্যানের বাইরে বের করার সাহস পাচ্ছি না৷”
গত শুক্রবার ঘটনাটি ঘটে৷ স্বল্পবসনা ওই তরুণীকে অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় পার্ক স্ট্রিট থেকে উদ্ধার করে পুলিশ৷ ফিটনেস টেস্টের জন্যই তাকে ন্যাশনালে আনা হয়েছিল৷ এক লেডি কনস্টেবল ওই তরুণীকে এমার্জেন্সিতে নিয়ে যাচ্ছিলেন৷ তরুণী চিৎকার করছিলেন৷ এমার্জেন্সির ঠিক বাইরেই একটি বেঞ্চ পেতে বসেছিলেন গ্রুপ ডি কর্মী নারায়ণ অধিকারী৷ এমার্জেন্সিতে অপারেশন থিয়েটারে ডাক্তারদের সহায়তা করেন নারায়ণবাবু৷ ‘স্টিচ’ করার হাতও খুব ভাল৷ নারায়ণবাবু মেয়েটিকে দেখে এগিয়ে আসেন৷ প্রশ্ন করেন, “তুমি তো ভদ্র বাড়ির মেয়ে৷ কেন এমন করছ?” প্রশ্ন শুনেই ওই তরুণী জড়িয়ে ধরে চুমু খান প্রশ্নকর্তাকে৷
কী বলা যায় একে? ‘পুরস্কার’ না ‘শাস্তি’?
যাই হোক, আদর সহ্য হয়নি ষাট ছুঁইছুঁই প্রশ্নকর্তার৷ শান্তনুবাবু জানালেন, ওই স্বাস্থ্যকর্মীকে আত্মরক্ষার কোনও সময় দেয়নি তরুণী৷ লেডি পুলিশ কনস্টেবল যখন মেয়েটিকে সরিয়ে নিলেন তখন কোনও হুঁশ নেই নারায়ণবাবুর৷ এই ঘটনা নিয়ে এখনও রসিকতা চলছে ন্যাশনালে৷ রাতারাতি টিআরপি বেড়ে গিয়েছে নারায়ণবাবুর৷ সবার এক প্রশ্ন, ‘কেমন লেগেছিল নারায়ণদা?’
কেউ আবার হন্যে হয়ে সেই রাতের সিসিটিভি ফুটেজ খুঁজছেন৷ ন্যাশনালের এমএসভিপি ডা. পীতবরণ চক্রবর্তী জানালেন, “এমন ঘটনা যে একেবারে হয় না তা নয়৷ ব্যথা সহ্য করতে না পেরে রোগিনী ডাক্তারকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেছেন৷ কিন্তু রোগিণীর চুম্বনে স্বাস্থ্যকর্মীর মূর্ছা যাওয়ার ঘটনা সরকারি হাসপাতালের ইতিহাসে সম্ভবত প্রথম!”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.