রিংকি দাস ভট্টাচার্য: ‘গলদা চিংড়ি না বাগদা! গলদা চাইলে কিন্তু প্লেট প্রতি ৪০-৫০ টাকা বেশি পড়ে যাবে।”- কথাটা শেষ করেই ধপাস করে ফোনটা কেটে দিলেন বালিগঞ্জের মোহন বটব্যাল। এই হয়েছে এক জ্বালা! সকাল থেকেই ফোনের ঠেলায় পাগলপ্রায় অবস্থা। বৈশাখ মাস পড়তেই শুরু হয়ে গিয়েছে বাঙালির বিয়ের মরশুম। মোহনবাবুর পারিবারিক ব্যবসা রয়্যাল ক্যাটারারের এলাকায় নামডাক প্রচুর। হাতে অসংখ্য অর্ডার। মনে তাই খুশি-খুশি ভাব। কিন্তু সবকিছু কেঁচিয়ে দিল ভাগাড় কাণ্ড।
[ভাগাড় থেকে মাংস যাবে হোটেলে, হিমঘরে মজুত টন টন মাংস]
ক’দিন ধরে ফিসফাস গুজগুজ চলছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবারের পর এমন আতঙ্ক ছড়িয়েছে যে খাসির মাংসের নাম শুনেই লোক কার্যত পালিয়ে যাচ্ছে। এমনকী, যাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠানে মেনুতে খাসির মাংস ছিল, তাঁরাও এখন মেনু বদলে ফেলতে চাইছেন। এই বদলের ঠেলা সামলাতেই ত্রাহি রব বটব্যালবাবুর মতো শহরের ছোট থেকে বড় ক্যাটারিং সংস্থাগুলির। যেমন ভোজ ক্যাটারার। শহরের অন্যতম জনপ্রিয় এই ক্যাটারিং সংস্থার ম্যানেজার রানা চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘কী করব বলুন! খদ্দেরের আবদার তো রাখতেই হবে।’ একই অবস্থা বাগুইআটির ইউনিট ক্যাটারারের মালিক সোহম কুণ্ডরও। তাঁর আক্ষেপ, ‘মাংসের হিসাবে প্লেট ধরে অগ্রিম টাকা নিয়ে নিয়েছি। সাপ্লায়ারকে সেই মতো অর্ডারও দেওয়া হয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে অনেক পরিবারই মাংস চাইছেন না। কী করি বলুন তো!’ সমস্যা আরও আছে। ক্যাটারিং সংস্থাগুলির দাবি, মাংসের বদলে দু-তিন রকমের মাছের পদ করতে গিয়ে প্লেট প্রতি খরচ বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাড়তি টাকা দিতেও গড়মসি করছেন অনেকেই।
[ডিভোর্স মামলায় গরহাজির শোভন, ফের দম্পতিকে তলব আদালতের]
ক্যাটারিং সংস্থাগুলি সমস্যা তো না হয় বোঝা গেল। কিন্তু, কী বলছেন অনুষ্ঠান বাড়ির লোকেরা? বেজায় বিপাকে পড়েছে তাঁরাও। মানিকতলার প্রতিমলাল দত্ত বরাবরই খাসির মাংসর ভক্ত। ফি রবিবার সকাল লাইন দিয়ে মাংস কেনেন। অনুষ্ঠানের কথা তো ছেড়েই দিন, এমনি দিনেও বাড়িতে মুরগি ঢোকে না। ছেলের বউভাতের মেনুতেও তাই ছিল মাটন কোর্মা। তাঁর আক্ষেপ, ‘এই প্রথমবার আমার পরিবারের কোনও অনুষ্ঠান থেকে মাংস বাদ গেল।‘
[সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত ছুটবে অত্যাধুনিক চালকহীন রেক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.