ছবি:ফাইল
কৃ্ষ্ণকুমার দাস: করোনায় জেরে ত্রাণ বিলির নামে যাঁরা স্রেফ নিজেদের প্রচারের স্বার্থে জনতার মাঝে ছবি তুলছেন, তাঁদের ‘অমানবিক ও ক্ষতিকর’ বলে সোমবার কটাক্ষ করলেন কলকাতার মেয়র ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ‘কিছু মানুষ ত্রাণের ছবি তোলার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন’ বলে আক্রমণ করে মেয়র বলেন, “লোকদেখানো ত্রাণ দিতে গিয়ে লকডাউনের সামাজিক দূরত্বের নিয়ম ভাঙছেন। দু-চারশো লোক এক জায়গায় এনে ভিড় করে দেখাচ্ছেন, কত বেশি মানুষকে চাল-গম দিয়েছেন তিনি। গাদাগাদি করে ত্রাণ নিয়ে গিয়ে সংক্রমণ ছড়ানোর পথ প্রশস্ত হচ্ছে। কেউ ত্রাণ দিতে চাইলে নিঃশব্দে বাড়ি বাড়ি গিয়ে একাই দিয়ে আসুন, দূর থেকে খাবার পৌছে দিন।”
কলকাতার অতি সংক্রমণ প্রবণ কিছু ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নিয়ে এদিন মাইক্রোপ্ল্যানিং কার্যকর করা নিয়ে পুরভবনে বৈঠকে বসেছিলেন মেয়র। এই ওয়ার্ডগুলিতে কাউন্সিলররা সক্রিয় না হওয়ায় লকডাউন কড়াকড়ি হয়নি বলে করোনা দ্রুত ছড়াচ্ছে। বৈঠকে কোভিড—১৯ প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় সতর্কতার পাশাপাশি এই ত্রাণ বিলি নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন। রুদ্ধদ্বার কক্ষে কিছু কাউন্সিলরের আচরনে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “যাঁরা ভাবছেন ত্রাণ বিলি করে ভোটে জেতা যাবে তাঁরা মুর্খের স্বর্গে বাস করছেন। যদি ত্রাণ দিতে হয় তবে বাড়ি বাড়ি পৌঁছান, ছবি তোলার রাজনীতি বন্ধ করুন।”
ত্রাণ বিলি করে, প্রাপকদের সঙ্গে ছবি তুলে জনপ্রতিনিধিরা তা সোশ্য়াল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন, সংবাদমাধ্যমেও সেই ছবি প্রকাশিত হচ্ছে, সম্প্রতি এই ছবি অতি পরিচিতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাদ যাননি শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরাও। নাম না করে তাঁদেরই সমালোচনা করেছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। দলের সহকর্মীদের একাংশ যেভাবে ত্রাণ বিলির নামে ছবি তোলার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন কার্যত তারও সমালোচনা করেন পুরমন্ত্রী। মেয়র নিজের ওয়ার্ডে ও বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটি বুথে বুথ সভাপতির হাত দিয়ে বাড়ি বাড়ি ত্রাণ পাঠাচ্ছেন। কোথাও ছবি তোলা যাবে না বলেও পার্টি কর্মীদের প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এদিন উত্তর কলকাতার জোড়াসাঁকো, বড়বাজার, বেলেঘাটা, এন্টালি, বেনিয়াপুকুর, পার্কসার্কাস ও দক্ষিণের বালিগঞ্জ, তপসিয়া ও গার্ডেনরিচের ২৫-২৬জন কাউন্সিলর নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন মেয়র। ছিলেন ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত অতীন ঘোষ, সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন, রাজ্য সরকারের কোভিড কমিটির অন্যতম সদস্য ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.