অভিরূপ দাস: “ওটা কে বানিয়েছে?”
“শোভনবাবু স্যার।”
“দারুণ কাজ করেছে তো।”
যিনি প্রশংসা করছেন তিনি কলকাতা পুরসভার বর্তমান মেয়র। রাজ্যের পুরমন্ত্রী। ফিরহাদ হাকিম। যাঁর প্রশংসা হচ্ছে তিনি শুধু প্রাক্তন মেয়র নন, তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। তবে এই মুহূর্তে গেড়ুয়া শিবিরে। ক’মাস বাদেই পুরভোট। সূত্রের খবর, শোভনকে দিয়েই ছোট লালবাড়ি দখলের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করছে পদ্ম শিবির। শত্রু শিবিরের এহেন শোভন চট্টোপাধ্যায় থুড়ি কাননেরই ভূয়সী প্রশংসা শোনা গেল মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মুখে। সম্প্রতি বেহালার পর্ণশ্রী থেকে পুরসভায় অভিযোগ এসেছে। বেহালার সঞ্জীব রায়চৌধুরীর অভিযোগ, তাঁর এলাকার কমিউনিটি হলের বুকিং পাওয়া যাচ্ছে না। সামনেই মেয়ের বিয়ে। মেয়র যদি একটু সাহায্য করেন। উপকার হয়। এরপরেই আধিকারিকদের কাছ থেকে খোঁজ খবর নিয়ে মহানাগরিক জানতে পারেন বেহালার পর্ণশ্রীতে এই কমিউনিটি হলটির নাম আগমনি।
পেল্লায় এই কমিউনিটি হলটির মারাত্মক চাহিদা। একসঙ্গে ১২৫ জন বসে খেতে পারেন এখানে। ২০০ জনের বুফে খাওয়ার বন্দোবস্ত রয়েছে। আধিকারিকদের কাছ থেকেই মেয়র খবর পান আগমনি কমিউনিটি হল এখন বুক করলে ২০২১ এর আগের ডেট পাওয়া যাচ্ছে না। যা শুনে মস্করা করতেও ছাড়েননি তিনি। বলেছেন, “আরে এ তো দেখছি মেয়ের বিয়ের জন্য বুক করতে গেলে নাতির অন্নপ্রাশনের জন্য পাওয়া যাবে।” এমন কমিউনিটি হল শোভন চট্ট্যোপাধ্যায়ের হাতে উদ্বোধন হয়েছে শুনেই ভুয়সী প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন ফিরহাদ। বলেছেন, শোভন দারুন কাজ করেছে। এত কম টাকায় এত উন্নতমানের কমিউনিটি হল সত্যিই আর একটাও নেই। এমনকি শোভনের তুলনায় নিজের এলাকার কমিউনিটি হলকেও পিছিয়ে রেখেছেন তিনি।দরাজ গলায় জানিয়েছেন, আমার এলাকাতেও মণিকা নামে একটি কমিউনিটি হল রয়েছে। তবে সেটা অত ভালো নয়। শোভনের তৈরি করাটাই সেরার সেরা। পুরভোটের আগে পুরনো দলে ফিরতে পারেন কানন। এমন একটা ক্ষীণ গুঞ্জন চলছিল অনেকদিন ধরেই। ফিরহাদ হাকিমের প্রশংসায় কি সেই তথ্যেই শিলমোহর পড়ল? পুরসভার বাম কাউন্সিলররা বলছেন, পুরো বিষয়টাই গটআপ। আরএসপি কাউন্সিলর দেবাশীস মুখোপাধ্যায় বলছেন, এটা কোনও ব্যক্তির প্রশ্ন নয়। নীতির প্রশ্ন। শোভন আর ফিরহাদ একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এরা যে একে অপরের পিঠ চুলকোবে এটাই স্বাভাবিক।
কমিউনিটি হলের বুকিং অনলাইন করার প্রসঙ্গে মেয়র জানিয়েছেন, স্থানীয়রাই চাননা অনলাইন বুকিং চালু করতে। মেয়রের কথায়, “আমি বহুবার চেয়েছি অনলাইন বুকিং চালু করতে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অনলাইনে বুকিং চালু হলে আমরা আর পাবো না। বেপাড়ার লোকেরাই বুক করে নেবে।”
[আরও পড়ুন: কলকাতা বইমেলায় ফের ‘বেস্ট সেলার’ মমতা! ৬ দিনে শেষ মুখ্যমন্ত্রীর CAA বিরোধী বই ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.