অভিরূপ দাস: বেআইনি বাড়ি ওঠার মুহূর্তে খবর আসছে না। খবর যখন এসে পৌঁছচ্ছে ততদিনে বেআইনি বাড়ি তৈরি হয়ে তাতে লোক ঢুকে পড়েছে। এ বিষয় নিয়ে একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। কেন সময় মতো পৌঁছচ্ছে না খবর? বাস্তব হিসাব বলছে, লোকবলের অভাবেই বেআইনি বিল্ডিং ওঠার মূহূর্তে খবর পাচ্ছে না কলকাতা পুরসভা।
বাড়ি অনৈতিকভাবে তৈরি হচ্ছে কি না আর পাঁচজনের পক্ষে তা বোঝা অসম্ভব। কিন্তু পুরসভার ওয়ার্ডের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার তা আন্দাজ করতে পারেন একবার দেখেই। নিয়ম অনুযায়ী কলকাতা পুরসভার (KMC) ১৪৪টা ওয়ার্ডের একশো চুয়াল্লিশ জন সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে আছেন মোটে ৫০ জন। একজনকে প্রায় তিনটে করে ওয়ার্ড পরিদর্শন করতে হবে।
অবিলম্বে আরও কুড়িজন সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার লাগবে বলে জানিয়েছেন বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা। পুরসভার একেকটি ওয়ার্ড গড়ে ন’লক্ষ বর্গ মিটারের। তিন তিনটে ওয়ার্ড একজন সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের পক্ষে ঘুরে দেখা কার্যত অসম্ভব। এর সুযোগ নিয়ে শহরের একাধিক ওয়ার্ডে গজিয়ে উঠছে একের পর এক বেআইনি বিল্ডিং।
কিন্তু সময়মতো খবর পাচ্ছে না কলকাতা পুরসভা। খবর যখন আসছে ততদিনে বেআইনি বাড়ি উঠে তাতে লোক ঢুকে পড়েছে। সেসময় বেআইনি বাড়ি ভাঙতে সমস্যা হচ্ছে। সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার কম থাকায় বেআইনি বাড়ি ভাঙায় পুরসভাকে নির্ভর করতে হচ্ছে সাধারণ বাসিন্দাদের উপর। তাঁরাই টক টু মেয়রে ফোন করে বেআইনি বাড়ির খবর দিচ্ছেন। সম্প্রতি মেয়রের সহপাঠী সৈকত চট্টোপাধ্যায় ফোন করে বেআইনি বিল্ডিং তৈরির অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারী সৈকত চট্টোপাধ্যায় জানান, গার্ডেনরিচে ১৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে ইউ ওয়ান ৩৪ নম্বর প্রেমিসেসে একটি বিল্ডিং উঠছে।
বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে খবর, শুধু ওয়ার্ডে বেআইনি বাড়ির খবরই নয়। একজন সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের কাজ অনেক। বাড়ির নকশা খতিয়ে দেখে তার অনুমোদন দিতে হয় এই সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বা এসএই-দের। বিপজ্জনক বাড়ি পড়লেও তা গিয়ে দেখতে হয় এদের। লোকবলের অভাবে সেই সমস্ত কাজই হচ্ছে ধীরগতিতে। সমস্যা মেটাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন মেয়র। বাড়ির অনুমোদন প্ল্যান কিংবা বেআইনি বাড়ির সন্ধান দেওয়া, সমস্ত বিষয়টি অনলাইনে এনেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুরসভায় না এসে ৮৩৫৫৯৯৯১১১ এই নম্বরে বিল্ডিংয়ের প্ল্যান কিংবা বেআইনি বাড়ি সংক্রান্ত তথ্য দিতে পারবেন যে কেউ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.