রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: শুক্রবার রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতায় সাংগঠনিক বৈঠকে পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের প্রস্তুতি নিয়ে রিপোর্ট নেবেন রাজ্য নেতাদের কাছ থেকে। তার আগেই তড়িঘড়ি জেলা সভাপতি, জোন ও জেলা ইনচার্জদের নিয়ে আজ ইজেডসিসিতে বৈঠক ডাকল বঙ্গ বিজেপি (BJP)Panchaye। সংগঠনের হাল নিয়ে অমিত শাহর প্রশ্নের মুখে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই জেলা নেতাদের কাছ থেকে সংগঠনের হাল নিয়ে তড়িঘড়ি রিপোর্ট তৈরি করতে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
শাহ আসার আগেই আজকের বৈঠকে রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের তোপের মুখেও পড়তে চলেছেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা। আজ তিন দফায় বৈঠক হবে। প্রথমে পঞ্চায়েত প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক। পঞ্চায়েতের প্রস্তুতি একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে খবর। রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরের বিরুদ্ধে দলের একাংশের অভিযোগ, গত পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির জয়ী হওয়া প্রার্থীদের সিংহভাগই নিষ্ক্রিয়। গতবার গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে পদ্ম প্রতীকে জয়ীদের ৮০ শতাংশের সঙ্গেই যোগাযোগ করেনি রাজ্য নেতারা। অর্ধেক জেলা সভাপতিরা তাদের চেনেই না। আর প্রার্থী বাছাইও হয়নি অধিকাংশ জেলাতেই।
দ্বিতীয় বৈঠকটি রয়েছে বুথ সশক্তিকরণ নিয়ে। সেখানেও বুথের অবস্থা নিয়ে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট উঠে এসেছে। বুথে সংগঠন গড়ে তোলার যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল তার ধারে কাছে এখনও পৌঁছনো যায়নি। গত মার্চ মাস থেকে ঢাকঢোল পিটিয়ে শুরু হয়েছিল বুথ সশক্তিকরণ অভিযান। নেতা-কর্মীদের উৎসাহিত করতে মাঠে নামানো হয়েছিল অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকেও। রাজ্য নেতৃত্বকে জেলা ও মন্ডলস্তর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যুক্ত করা হয়েছিল। এসবই চেষ্টা করেছিল দিল্লি। তারপরও কেন নিচুতলার সংগঠন গড়ার কাজে সাফল্য এল না, সেই প্রশ্ন উঠেছে দলের মধ্যেই। ফলে এই দু’টি বৈঠকেই আজ সুনীল বনসল থেকে মঙ্গল পাণ্ডেদের তোপের মুখে পড়তে চলেছেন রাজ্য নেতারা।
দলীয় সূত্রে খবর, দক্ষিনবঙ্গে গড়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বুথে কমিটি হয়েছে। হাওড়া, হুগলি ও দুই২৪ পরগনাতে গড়ে ২০ শতাংশ। মালদহ-মুর্শিদাবাদে ১০ থেকে ২০ শতাংশের মতো। দুই মেদিনীপুর, নদিয়া, দুর্গাপুর-আসানসোল ও জঙ্গলমহলের জেলাগুলোতে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বুথে কমিটি হয়েছে। উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও দুই দিনাজপুরে গড়ে কমিটি হয়েছে ৬০ শতাংশ বুথে। আর এই অগ্রগতি দেখে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে একটা জেলা পরিষদও পদ্মের দখলে আসবে কি না তা নিয়ে নিশ্চিত রিপোর্ট নেই দলের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায়। এই পরিস্থিতি, অমিত শাহর তোপের মুখে পড়ের আগে রাজ্য নেতৃত্ব দলের দুরবস্থার ছবি আড়াল করতে চাইছে কী না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে দলের বিক্ষুব্ধ শিবির।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.