নব্যেন্দু হাজরা: ফুলের ঘাটতি নেই। দামও খুব বেশি তেমনটা নয়। কিন্তু হাত ঘুরে মালা হয়ে বিয়েবাড়ি পৌঁছতেই আচমকাই দামের শৃঙ্গ অভিযান। বিয়ের মাস পড়তেই বর-বউয়ের গোড়ে মালা মহার্ঘ। গোলাপ তো বটেই, রজনীর মালাও বিকোচ্ছে ১২০০-১৫০০ টাকা জোড়ায়। আর তিন ফুটের রং-বেরংয়ের গোলাপের মালার দাম উঠেছে পাঁচ হাজার টাকা। তবে তা বেঙ্গালুরুর গোলাপ (Roses)।
এখানকার গোলাপের মালা বিকোচ্ছে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারে। ফুলের দোকানে মালার অর্ডার দিতে গিয়ে মাথায় হাত পড়েছে ছেলে-মেয়ের বাবা-মায়ের। দামের ঠেলায় বেড়ে গিয়েছে গেট থেকে খাট সাজানোর খরচও। তবে সকলেই বলছেন, আগে গোলাপের মালা (Rose garland) বেশি অবাঙালিদের বিয়েতেই দেখা যেত। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, বাঙালিরাও একটু খরচের সামর্থ্য থাকলেই রজনী ছেড়ে গোলাপের মালা গলায় ঝোলাচ্ছেন। আর তাতেই তার দাম বাড়ছে।
বিয়ের মরশুম চলছে। আপাতত এই দামের হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার তেমন কোনও আশা নেই বলেই জানাচ্ছেন ফুলব্যবসায়ীরা। কারণ, এখনও তেমন ঠান্ডা না পড়ায় সেভাবে ফুল (Flowers)নষ্ট হচ্ছে না। কিন্তু এরপর শিশিরে প্রচুর ফুল নষ্ট হবে। আর তখনই এই দাম আরও কিছুটা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। তবে এতটা দাম যে হওয়া ঠিক নয়, তা মানছেন ফুলচাষিরাই। তাঁদের মতে, এত হাত ঘুরে মালা বর বা বউয়ের গলায় এসে পৌঁছচ্ছে যে তার দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে।
শনিবার হাওড়া (Howrah) মল্লিকঘাটের ফুলবাজারে ১০০টি লাল গোলাপ ২৫০ টাকা একশো এবং গোলাপি, সাদা বা অন্য রংয়ের গোলাপ ৩০০ টাকা শ’য়ে বিকিয়েছে। আর রজনীগন্ধার দাম কেজি প্রতি ১০০-১২০ টাকা। ব্যবসায়ীদের কথায়, তিন ফুটের মালায় ২০০-২৫০ পিস গোলাপ লাগে সাধারণত। অর্থাৎ মেরেকেটে ৫০০-৮০০ টাকার ফুল লাগে। রাংতা দিয়ে মুড়িয়ে তা বানানোর পারিশ্রমিক নিয়ে বড়জোর আরও ৫০০-৬০০ টাকা লাগার কথা। সেক্ষেত্রে দাম বড়জোর হাজার দেড়েক টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু তা ৩০০০ টাকা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
বেঙ্গালুরুতে (Bangalore) গোলাপের পাপড়ির মালা বিকোচ্ছে পাঁচ হাজার টাকা পিসে। এটা শহরতলির হিসাব। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, দিন দুই টাটকা থাকবে এই মালা। যেহেতু পাপড়ি খুলে এই মালা বানানো তাই তা বানাতে পাঁচ থেকে ছ’ঘণ্টা সময় লাগে। কাজ করেন তিনজন কর্মী। যে কারণে এই মালার দাম মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। তবে তা পাঁচ হাজার হওয়া কখনই উচিত নয়। ফুল কেনা থেকে বিয়েবাড়ি পৌঁছনো পর্যন্ত অনেকের হাত ঘুরছে। আর তাতেই দামটা মাত্রা ছাড়াচ্ছে। গেট সাজছে চন্দ্রমল্লিকায়। তার দামও চড়া। যে যেমন পারছেন দাম নিচ্ছেন।
সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘‘বিয়ের মরশুমের ফুলের দাম একটু চড়া ঠিকই। কিন্তু বর-বউয়ের মালা তৈরি থেকে বিয়েবাড়ি পৌঁছনো পর্যন্ত এতজনের হাত ঘোরে যে দামটা বেড়ে যাচ্ছে। এটা হওয়ার কথা নয়।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.