ছবি: প্রতীকী
কৃষ্ণকুমার দাস: আধার, ভোটার ও প্যান কার্ডে আবেদনকারীর জন্মতারিখ পৃথক থাকায় রাজ্যে প্রায় দেড় লক্ষ প্রবীণ মানুষ বিধবা ও বার্ধক্যভাতা পাচ্ছেন না। শুধু তাই নয়, স্বামী বা পিতার নামেও ত্রুটির জেরে বয়সজনিত পেনশন পাচ্ছেন না হাজার হাজার বয়স্ক নাগরিক। আবার অনেকের ডিজিটাল রেশন কার্ড (Digital Ratuion Card) নেই এবং ব্যাংকে সিঙ্গল অ্যাকাউন্টে এখনও ‘কেওয়াইসি’ জমা না দেওয়ায় পেনশন অনুমোদন হচ্ছে না। গত কয়েকমাসে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ ও ‘গ্রিভান্স সেলে’ আসা কয়েক লক্ষ আবেদনকারীর অভিযোগ পরীক্ষার পর এমনই তথ্য পেয়েছেন নবান্নের আধিকারিকরা। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই আবেদনকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে সংশ্লিষ্ট ত্রুটি সংশোধনের পর বয়স্কদের পেনশন এবং বিধবা ভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রয়োজনমতো বয়স বা নামের বিভ্রাট ত্রুটিমুক্ত করার পরেই বিধবা ও বার্ধক্যভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে নবান্নের (Nabanna) দাবি। আবেদন করেও যাঁরা মাসের পর মাস ও বছরের পর বছর বিধবা ও বার্ধক্যভাতা পাচ্ছেন না তাঁরা অনেকেই ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’র নম্বরে ফোন করে অভিযোগ করেছেন। বেশ কয়েকজন প্রবীণ নাগরিক দু’-তিন বছর ধরে বারে বারে আবেদন করেও পেনশন পাচ্ছেন না বলে গ্রিভান্স সেলে (Greivance cell) অভিযোগ করেন।
সমস্ত আবেদন খতিয়ে দেখে আবেদনকারীদের অন্তত ছ’টি ত্রুটি চিহ্নিত করেছেন নবান্নের আধিকারিকরা। প্রথমত, বিধবা ও বার্ধক্যভাতার জন্য যাঁরা আবেদন করেছেন তাঁদের আধার, প্যান ও ভোটার কার্ডে জন্মতারিখগুলি পৃথক। যেমন একজন আবেদনকারীর জন্ম ১৯৫৮ সালে। কিন্তু আধার কার্ডে ৩/২/১৯৫৮, প্যান কার্ডে ৩০/৩/১৯৫৮ এবং ভোটার কার্ডে ১৩/৩/১৯৫৮ বলে জানান আধিকারিকরা। দ্বিতীয়ত, আধার, প্যান ও ভোটার কার্ডে অনেক ক্ষেত্রে আবেদনকারীর নাম বা বাবার নামের সম্পূর্ণ উল্লেখ না থাকায় বয়সজনিত পেনশন মঞ্জুর হচ্ছে না। তৃতীয়ত, বিধবাভাতার জন্য আবেদনকারীদের ভোটার ও আধার কার্ডে থাকা প্রয়াত স্বামীর সম্পূর্ণ নাম ডেথ সার্টিফিকেটের (Death Certificate) সঙ্গে হুবহু না মিললে ভাতা মঞ্জুর হচ্ছে না। যেমন আধার কার্ডে শ্যামল দাস কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেটে শ্যামলবরণ দাস হয়েছে। এমন নামের তফাত থাকলেও আবেদনপত্র মঞ্জুর হয়নি।
চতুর্থত, আবেদনকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট (Bank Account) অবশ্যই সিঙ্গল হতেই হবে। বিধবাভাতার জন্য আবেদনকারী বহু মহিলা প্রয়াত স্বামীর সঙ্গে থাকা আগের জয়েন্ট অ্যাকাউন্টের নম্বর দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রেও তাঁদের পেনশনের আবেদন মঞ্জুর হচ্ছে না। পঞ্চমত, কেন্দ্রীয় সরকার মাস কয়েক আগে নিয়ম করেছে, বিধবা ও বার্ধক্যভাতার ক্ষেত্রে ডিজিটাল রেশন কার্ড থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু নবান্ন সূত্রে খবর, যাঁরা অভিযোগ করেছেন তাঁদের একাংশ পুরনো রেশন কার্ডের জেরক্স জমা দিয়েছেন। স্বভাবতই বাতিল হয়ে গিয়েছে আবেদন। ষষ্ঠ, আবেদনকারীর সিঙ্গল অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি ব্যাংকে ‘কেওয়াইসি’ জমা থাকাও বাধ্যতামূলক। যাঁরা কেওয়াইসি জমা দেননি তাঁদেরও আবেদন আটকে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.