ছবি: প্রতীকী
দীপঙ্কর মণ্ডল: রাজ্যজুড়ে করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসায় বৃহস্পতিবার থেকে ফের খুলে যাচ্ছে স্কুলের গেট। আপাতত ক্লাস হবে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির। কিন্তু প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়ারা কি স্কুলমুখী হওয়ার সুযোগ পাবে না? তাদের কি বাড়ির চার দেওয়ালে বন্দি থেকে অনলাইনেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে? নাহ্, সেই বন্ধন থেকে তাদের মুক্ত করার জন্য এবার শ্রেণিকক্ষের বাইরে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল একাধিক বেসরকারি স্কুল।
জানা গিয়েছে, স্কুলের কাছাকাছি মাঠেই ছোটদের পঠনপাঠন শুরু করছে শহরের অন্যতম বিখ্যাত বেসরকারি স্কুল ফিউচার ফাউন্ডেশন। এদিকে স্কুল মাঠেই সোমবার থেকে প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নেবে রামমোহন মিশন স্কুল। আসলে অষ্টম শ্রেণি থেকে ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত নিলেও সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত এখনও শ্রেণিকক্ষে পড়াশোনার অনুমতি দেয়নি রাজ্য সরকার। তারই বিকল্প হিসেবে সোমবার থেকে সরকারি উদ্যোগে শুরু হচ্ছে ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, এই ধরনের উদ্যোগ বেসরকারি স্কুলগুলিও (Private School) নিতে পারে। তারপরই ছোটদের ভারচুয়াল দুনিয়া থেকে বের করতে উদ্যোগী একাধিক বেসরকারি স্কুল।
রাত পেরোলেই খুলছে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের দরজা। সরকারি-বেসরকারি সমস্ত স্কুলেই অষ্টম থেকে দ্বাদশের ক্লাস শুরু হবে। স্যানিটাইজেশনের কাজ শেষ। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুলের বাকি ক্লাসগুলির জন্য শুরু হচ্ছে ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’। প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে স্কুল পরিদর্শকরা ইতিমধ্যে ভিডিও কনফারেন্স করেছেন। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, স্কুলের বারান্দাতেও পাড়ার শিক্ষালয় চালানো যাবে। তবে কোনভাবেই শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার করা যাবে না।
পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচিতে মর্নিং বা ডে স্কুল ধারণা থাকছে না। সকাল ১১টা থেকে টিফিনটাম বাদ দিয়ে ৪ ঘন্টা কর্মসূচি চালাতে হবে। ১০০ শতাংশ শিক্ষক শিক্ষিকাকে প্রতিদিন হাজির থাকতে হবে। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি ক্লাস সপ্তাহে অন্তত ২ দিন এই কর্মসূচিতে অংশ নেবে। স্কুলশিক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, পুরসভার বরো অফিস, গ্রামীন এলাকায় পঞ্চায়েত বা ব্লক থেকে বসার সতরঞ্জি, ত্রিপল প্রভৃতি দেওয়া হবে। পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বন্ধ থাকবে পাড়ার কার্যক্রম। ব্যানার এর আয়োজন করতে হবে। স্কুল পরিদর্শকরা প্রধান শিক্ষকদের জানিয়েছেন, শিশুদের স্কুলমুখী করাটাই এই প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য। গুরুগম্ভীর আলোচনা না করে গল্প, গান, ছড়া পাঠ, খেলার মাধ্যমে শিশুদের ক্লাস করাতে হবে। পাড়ার শিক্ষালয়ে স্কুল ড্রেস আবশ্যিক নয়।
পাড়ায় যেখানে ক্লাস চলবে সেখানে অন্য স্কুলের পড়ুয়া এলে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিশুদের প্রত্যেকের মুখে মাস্ক থাকবে। ৪ ঘণ্টা ক্লাসের মাঝে শিশুদের টিফিন এর সময় ধার্য থাকবে। মাথার ওপর শেড থাকবেই এমন নয়।শিশুদের আ্যাটেন্ডেন্স নিতে হবে প্রত্যেক দিন। শিক্ষক শিক্ষিকাদেরও আ্যাটেন্ডেন্স খাতায় স্বাক্ষর করতে হবে। কলকাতার কয়েকটি বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারাও স্কুলের মাঠে বা বারান্দায় পাড়ার শিক্ষালয় কর্মসূচি শুরু করবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.