ফাইল ছবি
অর্ণব আইচ: শুধুমাত্র বিদেশযাত্রায় খরচ ৫ কোটি! নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত মানিক ভট্টাচার্যের ছেলে সৌভিক সপরিবারে অন্তত ২০বার বিদেশভ্রমণ করেছেন। ইডি সূত্রে এমনই খবর। নিয়োগ দুর্নীতির টাকাতেই কি ভট্টাচার্য পরিবারের বিদেশ সফর? তদন্ত শুরু করেছে ইডি। এদিকে, শেষমেশ মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী ও ছেলেকে আদালত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৬ মার্চ পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
বুধবার আগাম জামিনের আরজি নিয়ে ব্যাঙ্কশাল আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ও ছেলে সৌভিক। সেই শুনানি চলাকালীন একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ করে ইডি। একদিকে বিদেশযাত্রায় বিপুল অংকের অর্থ খরচের অভিযোগ এনেছেন তাঁরা, অন্যদিকে তথ্য় গোপনের অভিযোগও করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-এর আধিকারিকরা।
ইডির দাবি, ২০১২ সাল থেকে অর্থাৎ নিয়োগ দুর্নীতির রমরমা অবস্থার শুরু থেকে অন্তত ২০বার বিদেশ সফরে গিয়েছে মানিক ভট্টাচার্যের পরিবার। বিদেশ সফরের তালিকায় ব্রিটেন, মালয়েশিয়া, ফ্রান্স, নাইজেরিয়া, মালদ্বীপ, ভিয়েতনামের মতো একাধিক দেশ রয়েছে। প্রতিটি সফরে খরচ হয়েছে অন্তত ৪০-৫০ লক্ষ টাকা। নিয়োগ দুর্নীতির টাকাতেই কি বিদেশ সফর? তদন্ত করে দেখছে ইডি। সৌভিকের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ এনেছেন তদন্তকারীরা।
ব্য়াঙ্কশাল আদালতে ইডির আইনজীবী দাবি করেছেন, ২০১৭ সালে দু’বার লন্ডন গিয়েছিলেন সৌভিক। কিন্তু জেরায় একবার ব্রিটেন সফরের কথা জানান তিনি। আইনজীবীর কথায়,”ইডি সব নথি খতিয়ে দেখে। সৌভিক ২০১৭-য় দু’বার ব্রিটেনে গিয়েছে। একবার মে ও আরেকবার জুলাই মাসে। সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য গিয়েছিল সৌভিক। বলা হচ্ছে, লন্ডনে বাড়ি আছে। এটা সেই বক্তব্যকেই মান্যতা দায়। সৌভিক তাঁর বয়ানে এই দু’টি বিষয় গোপন করেছিলেন।” এমনকী, মানিকের স্ত্রীও এবিষয়ে সব জানতেন বলেও আদালতে দাবি করেছেন ইডির আইনজীবী।
জমির বিরোধিতা করে তাঁদের দাবি, “এই মামলায় নাটকীয় পটপরিবর্তন হয়েছে। এটা মূলত দুর্নীতি, স্বজনপোষণ মামলা। সৌভিক ও মানিকের স্ত্রীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মানিকবাবুর স্ত্রীর জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে একজন রয়েছেন যিনি বহু আগে মারা গিয়েছেন। সেই অ্যাকাউন্ট এখনও চলছে। ওঁর স্ত্রী সক্রিয়ভাবে যুক্ত। মানিকবাবু যা করেছেন, তার সবটাই জানতেন শতরূপা।”
এদিন শুনানি চলাকালীন মানিকের স্ত্রী ও তাঁর ছেলেকে ধমক দেন বিচারক। এজলাসে শুনানি চলাকালীন খোশগল্প করছিলেন শতরূপা ও সৌভিক। তাঁদের এহেন কাজে বিরক্ত বিচারক ধমক দিয়ে বলেন, “এমন আচরণ করবেন না। আপনারা স্বাধীন নয়, অনেক কথা বলছেন। এরকম করলে পুলিশ ডাকব, হাজতে পাঠিয়ে দেব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.