Advertisement
Advertisement

Breaking News

Manik Bhattacharya

টাকার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে হুমকি! অজান্তেই মানিকের ‘পকেট ভরান’ সাড়ে ৪৯ হাজার বিএড পড়ুয়া

টাকা আদায়ের চাবিকাঠি ছিল তাপস মণ্ডলের হাতে।

Manik Bhattacharya was collecting money from private B.Ed students, said ED | Sangbad Pratidin

ফাইল ছবি

Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:October 28, 2022 8:55 am
  • Updated:October 28, 2022 8:55 am  

অর্ণব আইচ: নিজেদের অজান্তেই মানিক ভট্টাচার্যর (Manik Bhattyachariya) ‘পকেট ভরিয়েছিলেন’ বিএড কলেজের ৪৯ হাজার ৪০০ জন ছাত্র-ছাত্রী। করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে ক্লাস করার নামে তাঁদের কাছ থেকে যখন টাকা নেওয়া হয়েছিল, তখন তাঁরা জানতেনও না যে, ওই টাকা আসলে যাচ্ছে মানিক ভট্টাচার্যর ছেলের অ‌্যাকাউন্টে। এভাবে ২ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা ‘আদায়’ করেন মানিক ও তাঁর সহযোগীরা। এমনকী, কোনও কলেজ ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ওই টাকা নিয়ে মানিকদের না দিলে ওই কলেজ কর্তৃপক্ষকে রীতিমতো হুমকি দেওয়া হত বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই দুর্নীতির পুরো প্রক্রিয়ার পিছনে মানিক ভট্টাচার্যর মদত থাকলেও তার চাবিকাঠি মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের হাতেই ছিল বলে অভিযোগ ইডির। এই ব‌্যাপারে বেশ কিছু তথ‌্য উঠে এসেছে ইডির হাতে।

ইডি জানিয়েছে, প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ‌্যায়ের (Partha Chatterjee) পাঠানো মানিক ভট্টাচার্যকে একটি হোয়াটস অ‌্যাপ মেসেজের সূত্র ধরেই এই বিষয়টি জানতে পারেন গোয়েন্দারা। এর পর ধীরে ধীরে মানিক ভট্টাচার্য ও তাঁর ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে জেরা করে ইডি আরও তথ‌্য পায়। ইডির দাবি, একের পর এক তথ‌্য সাজিয়ে শেষ পর্যন্ত মানিক ভট্টাচার্যর ছেলে কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ শৌভিক ভট্টাচার্যর সংস্থার অ‌্যাকাউন্টে ২ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকার হদিশ মেলে। ওই পুরো টাকাই ৪৯ হাজার ৪০০ বিএড পাঠরত ছাত্র ও ছাত্রীর কাছ থেকে ‘আদায়’ করা। করোনা পরিস্থিতিতে তাঁরা রীতিমতো নিজেদের কলেজকে ওই টাকা দিতে বাধ‌্য হয়েছিলেন। আবার কিছু বিএড কলেজ চক্ষুলজ্জার খাতিরে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা না নিয়ে ওই টাকা নিজেরাই দিয়ে দেয়। কিন্তু কেউই তখন সম্ভবত জানতেন না যে, ওই টাকা কোথায় গিয়েছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: নিশীথ প্রামাণিকের দাঁড়ি-গোঁফ উপড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে আইনি জটে উদয়ন, পুলিশে অভিযোগ বিজেপির]

ইডির আধিকারিকরা জানান, একেকজন ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে নেওয়া পাঁচশো টাকা তাপস মণ্ডলের মাধ‌্যমে পৌঁছে যায় মানিক ভট্টাচার্যর হাতে। যদিও ওই টাকা মানিক নিজের কোনও অ‌্যাকাউন্টে না রেখে পাঠিয়ে দেন ছেলের কোম্পানির অ‌্যাকাউন্টে। এই ব‌্যাপারে ইডির হাতে এসেছে ‘অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং আর্কাইভার্স অ‌্যাসোসিয়েশন’-এর একটি চিঠি। চিঠিটি লিখেছিলেন অ‌্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাপস মণ্ডল। ওই অ‌্যাসোসিয়েশনের ঠিকানা তাপসেরই সল্টলেকের মহিষবাথানের অফিসে। ওই চিঠিতে স্পষ্টই লেখা রয়েছে যে, কোভিড পরিস্থিতিতে ওই সংগঠন এবিটিটিএএ-র নিয়ন্ত্রণে ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর নির্দেশনায় ডিএলএড-এর ২০১৮-২০২০ সেশনের অনলাইন ক্লাস শুরু হবে ২৪.৮.২০২০ থেকে। তার জন‌্য সংগঠনকে প্রত্যেক কলেজের ছাত্র ও ছাত্রীদের নামের তালিকা, হোয়াটস অ‌্যাপ নম্বর, মেল আইডি সংগঠনের মেলে ২০২০ সালের ১৫ আগস্টের মধ্যে পাঠাতে হবে। তার জন‌্য কলেজগুলির মাধ‌্যমে প্রত্যেক ছাত্র ও ছাত্রীকে পাঠাতে হবে ৫০০ টাকা করে। ইডির সূত্র জানিয়েছে, তাপস মণ্ডলকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় বিভিন্ন নথির সঙ্গে ওই চিঠিটিও তাঁর সামনে পেশ করা হয়। চিঠির সইটি যে তাঁর, তা স্বীকার করেছেন তাপস মণ্ডল। ইডির মতে, মানিক ভট্টাচার্যর নির্দেশেই তাপস মণ্ডল ছাত্র-ছাত্রীদের অজান্তে তাঁদের কাছ থেকেই ওই বিপুল টাকা নেওয়ার ব‌্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।

বিষয়টি অনেকেরই চোখে পড়ে। তাই এক রাজনৈতিক ব‌্যক্তিত্বই বিষয়টি হোয়াটস অ‌্যাপে পার্থ চট্টোপাধ‌্যায়কে জানান। কিন্তু ওই মেসেজটি পার্থবাবু মানিক ভট্টাচার্যকে পাঠিয়ে দেন। ফলে মানিক ওই টাকা লুকানোর সুযোগও পান বলে অভিযোগ। সেই ক্ষেত্রে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ‌্যায় পুরো বিষয়টিই জানতেন বলে দাবি ইডির। এই ব‌্যাপারে আরও তথ‌্য পেতে কয়েকটি বিএড ও ডিএলএড কলেজের কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের বক্তব‌্য নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে ইডি।

[আরও পড়ুন: ঝালদায় ইস্তফা তৃণমূল কাউন্সিলরের, দলবদলের অঙ্কে শাসকদলের হাতছাড়া আরও ১ পুরসভা?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement