শুভঙ্কর বসু: শরীরী মাপজোপ থেকে লিখিত পরীক্ষা। কিংবা ইন্টারভিউ। সবেতেই উত্তীর্ণ। কিন্তু একটা ছোট্ট ভুল! তাতেই সব শেষ। পাওয়া চাকরি হাতছাড়া হল। দিশাহীন হয়ে অবশেষে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ বছর তেইশের যুবক।
অসম রাইফেলসের কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য স্টাফ সিলেকশন কমিশনের (এসএসসি) ফর্ম ফিলাপ করেছিলেন কলকাতার যুবক কুলদীপ শাহ। কিন্তু সেখানে জন্ম তারিখ বসানোর সময় ভুল করে বসেন। নিজের জন্ম তারিখ ৩০ এপ্রিল ১৯৯৭-এর বদলে ১৩ এপ্রিল ১৯৯৭ লিখে ফেলেন। এরপর লিখিত পরীক্ষায় বসেন। তাতে সফল হওয়ার পর ফিজিক্যাল টেস্টেও উতরে যান। এরপর ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পড়ে। তাতেও বাছাই তালিকায় ছিলেন কুলদীপ। সব মিটে যাওয়ার পর কাগজপত্র-সহ তাঁকে চাকরিতে যোগদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলা হয়। আর ঠিক সেখানেই গোল বাধে।
দেখা যায় ফর্ম ফিলাপের সময় তিনি যে জন্ম তারিখ লিখেছিলেন তার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ইস্যু করা মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ডে উল্লিখিত তারিখের মিল নেই। ফলে হওয়া চাকরি নাকচ হয়ে যায়। এরপর এসএসসি-র আঞ্চলিক শাখার কাছে ভুল স্বীকার করে একাধিকবার আবেদন জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। শেষমেষ হাই কোর্টে মামলা করলে বিষয়টি বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে উঠে। এসএসসি-র কৌঁসুলি কুমারজ্যোতি তিওয়ারি সওয়ালে বলেন, “ওই পদে চাকরির জন্য ২০১৮-র জুলাইয়ে যে বিজ্ঞপ্তি বেরিয়েছিল তাতেই স্পষ্ট করে উল্লেখ রয়েছে, ফর্ম ফিলাপের সময় জন্ম তারিখ, লিঙ্গ, বাসস্থান, জেলা ইত্যাদির ক্ষেত্রে ভুল থাকলে তা চাকরির সময় গ্রহণযোগ্য হবে না।”
কুলদীপের আইনজীবী উজ্জল রায় অবশ্য মানবিক দিক থেকে আদালতের কাছে বিষয়টি বিবেচনার আবেদন জানান। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি তালুকদার পর্যবেক্ষণে বলেন, “জন্ম তারিখ ভুল লেখা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু নিছক একটি ভুলের জন্য এই কঠিন সময়ে কোনও যোগ্য ব্যক্তি চাকরি হারান এটা খুবই দুঃখজনক।” এরপরই স্টাফ সিলেকশন কমিশনের ডিরেক্টরকে বিষয়টি মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে ১৫ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের নির্দেশ দেন বিচারপতি। সেই মতো পরবর্তীতে আদালত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.