অঙ্কন: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
গৌতম ব্রহ্ম: নোভেল করোনা ভাইরাস ধীরে ধীরে প্রাণ কাড়ছে। ক্রমশ হয়ে উঠছে প্রাণঘাতী। কিন্তু সবটাই এত হতাশাজনক নয়। বরং এরই মধ্যে আশার দীপ আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। মাসখানেক ভেন্টিলেশনে থাকার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসছেন বছর বাহান্নর এক ব্যক্তি। আজ বিকেলেই ঢাকুরিয়ার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন তিনি। এহেন যুদ্ধজয়ীর ফেরার পথ চেয়ে বসে শুধু পরিবারই নয়, চিকিৎসক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। কোন জাদুতে এমন অসাধ্য সাধন? জানার অপেক্ষায় সকলে।
চলতি বছরের মার্চ মাসে করোনা পজিটিভ হয়ে ঢাকুরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হন সমাজকর্মী এই ব্যক্তি। দিনদিন শারীরিক অবস্থার এতটাই অবনতি হতে থাকে যে বছর বাহান্নর ওই ব্যক্তিকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয়। শুরু হয় এক অসম লড়াই। এমন এক রোগীর প্রতি যথেষ্ট যত্নশীল হয়েও চিন্তার শেষ ছিল না চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের। ক্ষণে ক্ষণে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি-অবনতির গ্রাফে নজর রেখেছিলেন সকলে। প্রায় যমে-মানুষে টানাটানি যাকে বলে, তেমনই চলছিল এতগুলো দিন ধরে। কিন্তু জীবনযুদ্ধে সহজে হাল ছাড়ার পাত্র নন তিনিও। সমাজকর্মী তিনি, সমাজের নানা স্তরের একাধিক সমস্যার সঙ্গে যুঝে আসা মানুষ। এত সহজে এক ভাইরাস কি তাঁকে কাবু করতে পারে? যতই তার মারণ ক্ষমতা তীব্র হোক।
কথায় বলে, মনের জোর আর অদম্য ইচ্ছাশক্তির কাছে পরাজিত হতে বাধ্য যে কোনও অশুভ শক্তি। হলও তাই। নোভেল করোনা ভাইরাসকে কার্যত দমন করে ভেন্টিলেশন থেকে হাসতে হাসতে বেরিয়ে এলেন এই সমাজকর্মী। যে দৃশ্য চমক লাগিয়েছে অতি অভিজ্ঞ, দক্ষ চিকিৎসকদেরও। কারণ, COVID-19এ আক্রান্ত হয়ে কেউ একবার ভেন্টিলেশনে ঢুকলে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসা বিরলের চেয়েও বিরলতম ঘটনা। সেদিক থেকে কলকাতার এই সমাজকর্মী রীতিমতো দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। কীভাবে যে এমন চমকপ্রদ সাফল্য, তা বুঝতে পারছেন না। ফলে এই মুহূর্তে চিকিৎসাবিজ্ঞান বিশেষত করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই ব্যক্তি গবেষণার কেন্দ্রবিন্দুতে। আজ বিকেলে তাঁকে ডিসচার্জ সার্টিফিকেট দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.