সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: বেহালায় মদের ঠেকে বন্ধু শুভ দাসকে ডেকে নিয়ে এসে সন্দেহের বশে তাঁকে পিটিয়ে খুন করল অন্য এক বন্ধু রাকেশ হালদার। বুধবার রাতের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল বেহালার চণ্ডীতলা এলাকায়। খুনের পর বন্ধু শুভর রক্তাক্ত দেহ এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে রাকেশ জানায়, “রাস্তায় পথদুর্ঘটনার কবলে পড়ে অজ্ঞাতপরিচয় এই যুবক কাতরাচ্ছিল। তাই তাঁকে তুলে আমি চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। আহত যুবকের পরিচয় আমার জানা নেই।” একথা বলে হাসপাতালে কোনওরকমে শুভকে ভরতি করেই সরে পড়ে রাকেশ। কিন্তু শুভর বাড়ির লোকজনের অভিযোগ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাকেশকে বেহালা থানায় আটক করে জেরা করা শুরু করে পুলিশ। এই জেরাতেই উঠে আসে আসল তথ্য। শুভকে রাকেশই খুন করেছে বলে জেরায় স্বীকার করে সে।
বেহালার চণ্ডীতলার বাসিন্দা শুভ (২৬) ও রাকেশ (৩০)। দু’জনেই ম্যাটাডরের চালক। দু’জনের মধ্যে দারুণ বন্ধুত্ব ছিল। রাকেশের বাড়িতেই অবাধ যাতায়াত ছিল শুভর। এই যাতায়াতের ফলে রাকেশের স্ত্রীর সঙ্গে শুভর ভাল সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রাকেশ ছিল সন্দেহবাতিক। শুভর সঙ্গে স্ত্রীর ভাল সম্পর্ককে মেনে নিতে পারছিল না রাকেশ। তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে প্রায়ই কথা বলতেন শুভ। সেটিও মানতে পারছিল না রাকেশ। তার সন্দেহপ্রবণ মন ধরেই নিয়েছিল স্ত্রীর সঙ্গে শুভর অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
বুধবার রাতে দু’জনেই ম্যাটাডর গ্যারাজ করে একসঙ্গে। এরপর শুভকে মদের ঠেকে ডেকে নিয়ে যায় রাকেশ। ঘটনাস্থলে পরপর গ্যারাজ করা থাকে ম্যাটাডর ও মিনিডোর। তারই ফাঁকে বসে শুভ-রাকেশের জমজমাট মদের আসর। এই আসরেই প্রথমে স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে শুভকে আক্রমণ করে রাকেশ। শুরু হয় দু’পক্ষের বচসা। এরপরেই কাঠের বাটাম দিয়ে শুভর মাথায় আঘাত করে রাকেশ। সেখানেই রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে শুভ। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে রাকেশ নিজেই শুভকে একটি গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যায় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে মিথ্যা গল্প ফেঁদে শুভকে ভর্তি করে দিয়েই পালিয়ে যায় সে। বৃহস্পতিবার সকালে বেহালা থানায় রাকেশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন শুভর মা। আটক করা হয় রাকেশকে। এরপর জেরায় খুনের কথা স্বীকার করলে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.