নব্যেন্দু হাজরা: ‘”আমি তো জীবনে প্রথম মেট্রো চড়তে গিয়েছিলাম। জানতাম না মেট্রোর লাইনে কারেন্ট আছে। টপকাতে নেই। ভেবেছিলাম এটাও লোকাল ট্রেনের মতো। তাই উল্টোদিকে ট্রেন ঢুকছে দেখে ঝাঁপ দিয়ে প্ল্যাটফর্ম পালটাই।” বরাতজোরে জীবন ফিরে পাওয়ার পর রবিবার বিকেলে এই কথাগুলোই বলছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কামালগাজি কোতুলপুরের বাসিন্দা কার্তিক দাস। না জেনেই মেট্রোর লাইন টপকেছেন রবিবার সকালে। আপ থেকে ডাউন লাইন। যা দেখে তাজ্জব হয়ে গিয়েছিলেন শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশনে দাঁড়ানো অন্য যাত্রীরা। নজরে পড়তেই ধরেছে মেট্রো স্টেশনে কর্তব্যরত পুলিশ। কিন্তু নাহ, এতকিছুর পরও মেট্রো চড়া হয়নি তাঁর।
ঘড়ির কাঁটায় সকাল ১১টা ১৪ তখন। এমনিতেই রবিবার হওয়ায় ট্রেন কিছুটা দেরিতে। তাই প্ল্যাটফর্মে যাত্রী ছিল ভালই। আচমকাই বছর ২৩ এর এক যুবক ঝাঁপ দেন লাইনে। স্বাভাবিকভাবেই সকলে ভাবেন, আত্মহত্যার জন্য ঝাঁপ। চিৎকার করে ওঠেন সবাই। এসব দেখে ঘাবড়ে যান কার্তিকও। লাইন টপকে গিয়ে উলটোদিকের প্ল্যাটফর্মে ওঠার পর দেখেন সকলের চোখ ওর দিকেই। এরপরই কর্তব্যরত রেলপুলিশ আটক করে তাঁকে। নিয়ে যাওয়া হয় স্টেশন মাস্টারের ঘরে। কেন সে এরকম কাজ করল? উত্তর শুনে অবাক হন আরপিএফ কর্মী এবং স্টেশন মাস্টারও। মেট্রোর আইন অনুযায়ী ২৫০ টাকা জরিমানা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। বোঝানো হয়, লোকাল ট্রেনের লাইন পার হওয়াও অপরাধ। কিন্তু এই লাইন পার করা আত্মহত্যার চেয়ে কম নয়। কারণ থার্ড লাইনে বিদ্যুৎ থাকে। কোনও কারণে তাতে ছোঁয়া লাগলেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা।
কার্তিক জানান, “আমি রবিবারই প্রথম মেট্রোয় চড়লাম। শ্যামবাজার যাওয়ার কথা ছিল। অন্যসময় বাসেই যাই। কী মনে হল, মেট্রোয় চড়ি। টিকিট কেটে প্ল্যাটফর্মে ঢুকলেও বুঝতে পারিনি কোন দিকের ট্রেন শ্যামবাজার যায়। ভুল হয়ে গিয়েছে কাউকে না জিজ্ঞেস করাটা। উলটোদিকে ট্রেন আসছে দেখে ঝাঁপ দিয়ে ওই প্ল্যাটফর্মে উঠতে যাই। আর কখনও মেট্রোয় চড়ব না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.