অর্ণব আইচ: হাসপাতালে ওষুধ খাওয়ার লাইনে দাঁড়িয়ে আক্রমণের শিকার মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি। বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। কোনও রকমে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনায় অভিযুক্তকে এখনও গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। কারণ, অভিযুক্ত ব্যক্তিও মানসিক ভারসাম্যহীন।
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার পাভলভ হাসপাতালে। মৃত রোগীর নাম ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে পাভলভ হাসপাতালের পক্ষ থেকেই তপসিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যদিও খুনে অভিযুক্ত নিজেও মানসিক ভারসাম্যহীন বলে তাঁকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অভিযুক্ত যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রোগীদের ওষুধ খাওয়াচ্ছিলেন তপসিয়া গোবরার পাভলভ হাসপাতালের কর্মীরা। অভিযোগ, ঘটনার দিন ওষুধ খাওয়ানোর সময় হঠাৎই উত্তেজিত হয়ে পড়েন অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি। প্রথমে ওষুধ খেতে রাজি হয়নি সে। এরপর তাঁকে জোর করা হলেই রেগে যান তিনি। তাঁর পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ইন্দ্রজিৎ। অভিযুক্তের যাবতীয় রাগ গিয়ে পড়ে ইন্দ্রজিতের উপর।
[আরও পড়ুন: ভোটের আগে আরপিএফদের বদলি, প্রতিবাদে কমিশনে চিঠি]
হঠাৎই ইন্দ্রজিৎকে মারধর শুরু করেন ওই ব্যক্তি। তাঁর কিল ও ঘুসি খেয়ে ইন্দ্রজিৎ মেঝেয় লুটিয়ে পড়লে তাঁকে লাথি মারতে শুরু করেন অভিযুক্ত। যাঁরা ওষুধ খাওয়াচ্ছিলেন, তাঁরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেইসময় কর্মীদেরও আক্রমণ করার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত। কোনওক্রমে সকলের চেষ্টায় ইন্দ্রজিৎকে উদ্ধার করেন তাঁরা। তবে ততক্ষণে অচেতন হয়ে পড়েছেন ইন্দ্রজিৎ। ওই অবস্থায় তাঁকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দুই ব্যক্তিই গত বছর অক্টোবর মাসে ১৭ দিনের ব্যবধানে পাভলভ হাসপাতালে আসেন। তাঁদের দেখার মতো কেউ দেখার ছিলেন না। এই মানসিক হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তাঁদের চিকিৎসা শুরু হয়। পুলিশ খোঁজ নিচ্ছে, এর আগেও অভিযুক্ত উত্তেজিত হয়ে কাউকে মারধর করেছিলেন কি না? দু’জনেরই কী ধরনের চিকিৎসা চলছিল, তাও জানার চেষ্টা কর হচ্ছে। এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি পাভলভ হাসপাতালে রোগীদের নিরাপত্তার কোনও ঘাটতি ছিল? তদন্তের পরই গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হবে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.