সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতার ব্রিগেডে যখন জোট বেঁধে নিন্দায় বিরোধীরা, ঠিক সেই সময় সামনে এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যেভাবে এলেন, তার রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক। একটি সামরিক ট্যাঙ্কে চড়ে বসলেন মোদি। আর সেই ছবি ছড়িয়ে পড়তে একটুও দেরি হয়নি সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু তারপর নিজের খাসতালুক ব্রিগেডে যেভাবে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাতে বিরোধী জোট এমনিই অনেকটা মজবুত হয়ে গেল। বিরোধীদের আক্রমণের দিশা দেখালেন তৃণমূলনেত্রী। জানালেন, এবার বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই আরও একবার দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন। দেশের ধর্মীয় বিভেদ ও অরাজকতা থেকে মুক্ত করতে মোদিকে গদি থেকে সরানোর ডাক দিলেন তিনি। ‘সরফরাশি কি তমান্না’ থেকে ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা’, সবই উঠে এল মমতা কণ্ঠে। রাফাল, এনআরসি, জিএসটি, নোটবন্দি নিয়ে কড়া ভাষায় বিজেপিকে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, এই ব্রিগেডই বিজেপির শেষের শুরু।
শনিবার ব্রিগেডের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাংলার মাটি পবিত্র মাটি। সবাইকে সাক্ষী রেখে বলছি, স্বাধীনতা আন্দোলনে পথ দেখিয়েছে। নবজাগরণে পথ দেখিয়েছে। দেশে বিপদ এলেই বাংলা এগিয়ে এসেছে। সংস্কৃতি আন্দোলনের পথিকৃৎও বাংলা। ৭০ বছরে পাকিস্তান যা করতে পারেনি, চার বছরে মোদি সরকার তাই করেছে। বাজারে লেগেছে আগুন, জাগুন বাংলা জাগুন। নোটবন্দি থেকে জিএসটি থেকে রাফালে। দেশের সর্বনাশ করেছে এই সরকার।” বিজেপি সরকারের থেকেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপরেই আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির অন্দরেই আগুন লাগাতে আক্রমণ করলেন মমতা। জানালেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দলের লোকদেরই ভুলে গিয়েছেন মোদি। দেশের মানুষের কথা ভাবা অনেকদূরের কথা। মমতা বলেন, “রাজনাথ সিং, সুষমা স্বরাজ, নীতীন গড়করিকেও সম্মান দেননি মোদি। এনআরসি করে আসামের মানুষের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। এবার ভোটের সময় এসেছে। তাই মানুষের কাছে ভোট চাইতে এসেছে। আমরা হিটলার দেখিনি। মুসোলিনি দেখিনি। লোকে বলে ইন্দিরা গান্ধীর এমার্জেন্সির সময় দেশে খুব খারাপ অবস্থা ছিল। আমার মনে হয় এটা তার থেকেও খারাপ অবস্থা। এখন দেশে অঘোষিত এমার্জেন্সি চলছে।”
নরেন্দ্র মোদির আচ্ছে দিন নিয়েও কটাক্ষ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলনেত্রী বলেন, “অনেক হয়েছে আচ্ছে দিন। এবার বিজেপিকে বাদ দিন। বিজেপি যেখানে সভা করবে, পরের দিনই পালটা সভা করুন। মানুষকে বোঝান। প্রশ্ন করবেন, টাকাটা কার! মানুষকে সর্বনাশের পথে নিয়ে যাচ্ছে বিজেপি।” দেশের পুরনো সংস্কৃতির কথা তুলে ধরে মমতা বলেন, “দেশের ২৩টি দল এখন বিজেপির বিরোধী। আরও অনেক দল বিজেপিকে সমর্থন করবে না। ভারতের মানুষ কখনও বিভেদ, ঘৃণা, ভাগাভাগি পছন্দ করে না। বাজারে লেগেছে আগুন। জাগুন মানুষ জাগুন।” বিজেপির এক্সপেয়ারি ডেট পেরিয়ে গিয়েছে। তাই এবার বিজেপি সরকারকে সরিয়ে দেওয়ার সময় হয়েছে।
ছবি: পিন্টু প্রধান
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.