সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউনের মাঝে খাদ্যবণ্টন নিয়ে আগেই কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের থেকে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছিল। কেন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বিনামূল্যে সকলকে চাল-ডাল দেওয়া চালু হল না এখনও, রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের সচিবের কাছে জানতে চেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ান। তাতে রাজ্য পালটা জবাব দেয়, ফুড কর্পোরেশনের তরফে খাদ্যশস্য পেলেই তা বণ্টন করা হবে।
তবে এবার রাজ্যে খাদ্যবণ্টন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। বৃহস্পতিবার নবান্নে মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে তিনি প্রত্যক্ষভাবে তার প্রকাশ না করলেও ঘোষণা করে দিলেন, খাদ্য দপ্তরে নিয়োগ করা হচ্ছে নতুন সচিব। আর তাতেই সবটা স্পষ্ট হয়ে গেল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আজ নবান্নে মন্ত্রিগোষ্ঠীর জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে প্রথমে রাজ্যে করোনা পরিসংখ্যান পেশ করলেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। তিনি জানান, বাংলায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। এই মুহূর্তে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪৪ জন। তিনি আরও জানান যে কেন্দ্র-রাজ্য সম্মিলিতভাবে করোনা মোকাবিলায় কাজ করছে।
এসবের পর মুখ্যমন্ত্রী নিজের বক্তব্যের শুরুতেই খাদ্যবণ্টন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন যে তাঁর কাছে অভিযোগ এসেছে, কোথাও কোথাও খাদ্যবণ্টনে কারচুপি হচ্ছে, বেনিয়ম হচ্ছে। এমন কেন হচ্ছে, তা জানতে চান তিনি। সূত্রের খবর, এ নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উপর রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি। তবে তা প্রকাশ্যে না এনে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, বণ্টন যাতে ঠিকমতো হয়, তার জন্য খাদ্য দপ্তরের নতুন সচিবকে নিয়োগ করা হচ্ছে। এর আগে এই দপ্তরের সচিব ছিলেন মনোজ আগরওয়াল। তাঁকে কোথায় বদলি করা হল কিংবা তাঁর ভবিষ্যৎ কী, সে বিষয়ে কোনও ইঙ্গিত মিলল না।
আগেই রাজ্যের মিষ্টির দোকানগুলি দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যান্য দোকান খোলার নির্ধারিত সময়সীমা ছিল সকাল ১০টা থেকে সন্ধে ৬টা। এবার সেই সময়সীমা বদলে দেওয়া হল। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, এবার সকাল ৮টা থেকে মিষ্টির দোকান খোলা থাকবে। সূত্রের খবর, দুপুর ১২টা থেকে ৪টে পর্যন্ত তাঁদের দোকান খোলা রাখলে তেমন লাভ হচ্ছে না, এই মর্মে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আক্ষেপ প্রকাশ করেছিলেন। তাতেই তাঁর এই সময় বদলের ঘোষণা। রেশন দোকানও খোলা থাকবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত। তবে এদিনের বৈঠকের পর মূল আলোচনার কেন্দ্রে খাদ্য দপ্তরের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর অসন্তোষ। যার জেরে এই সংকটকালেও সচিব বদল করতে বাধ্য হওয়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.