সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের হামলায় টালমাটাল দেশের অর্থনীতি। জিডিপি তলানিতে এসে ঠেকেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ। সরকারি তহবিলেও অর্থ ঢুকছে না। এই অবস্থায় রাজ্যের অর্থনীতিকে সচল রাখতে কেন্দ্রের কাছে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার এই আলোচনায় অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যেমন কথা বলেছেন, পাশাপাশি রাজ্যের বর্তমান আর্থিক অবস্থায় স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আয় কমে গিয়েছে, বহিঃবাণিজ্য বন্ধ লকডাউনের জেরে আমদানি-রপ্তানিও তলানিতে এসে ঠেকেছে। সরকারি আয়ের পথগুলিও ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। আবার, পাশাপাশি রাজ্যের একটা বিশাল অংশের মানুষকে এই সময় গণবণ্টনের মাধ্যমে খবর নিখরচায় খাবার পাঠাতে হচ্ছে। গোডাউন থেকে পণ্য পরিবহণ করে রাজ্যের উপভোক্তাদের হেঁশেল পর্যন্ত পৌঁছে দিতে বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ হচ্ছে। এই পুরো খরচটাই বহন করতে হচ্ছে রাজ্যের কোষাগার থেকে। আবার করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে ও আনুষঙ্গিক খরচের জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় হচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে সেইভাবে কোনও আর্থিক সাহায্য রাজ্যে আসেনি। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে রাজ্যের তরফ থেকে করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি ভিত্তিতে ২৫ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে চেয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও বার্তায় সেই একই দাবি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
লকডাউন শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী আঠেরোটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে পরিযায়ী শ্রমিকদের থাকা খাওয়া ও চিকিৎসার বিষয়ে আশ্বাস চেয়েছিলেন। উদ্বিগ্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সময় বলেছিলেন, “ভিন রাজ্যে আটকে থাকা এরাজ্যের শ্রমিকদের বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখুক সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলি।” এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সেই প্রসঙ্গটিও আরও একবার উত্থাপন করেছেন তিনি। এটা যেমন একটা দিক, রাজ্যের কয়েক লক্ষ কৃষক, কৃষি শ্রমিক ও গ্রামের মানুষ ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত। টানা কয়েক বছর ধরে ১০০ দিনের কাজে অর্থ খরচের ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করে আসছে পশ্চিমবঙ্গ। এদিন মমতা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, এই লকডাউনের সময় গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিগুলিতে ১০০ দিনের কাজ প্রায় বন্ধ। গরীব মানুষ বাড়ি থেকে বেরতে পারছেন না। তাঁদের অনেকেই আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্র যদি দু’মাসের ১০০ দিনের কাজের টাকা একবারে মিটিয়ে দেয় তবে কিছুটা উপকার হবে। তাই কেন্দ্র যেন সহানুভুতির সঙ্গে বিষয়টি বিবেচনা করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.