সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জঙ্গলমহলে শবরদের মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী। অনাহারে মৃত্যুর তত্ত্ব খারিজ করে দিয়ে বিধানসভায় মমতা বলেন, ‘জঙ্গলমহলে অনাহারে মৃত্যু হয়নি কারও।এখন এরাজ্যে সবাই খেতে পান।শবরদের মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক।সাতজনের মধ্যে দু’জন মারা গিয়েছেন বয়সজনিত কারণে। আর বাকিদের মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত মদ্যপানে। নেশা ছাড়ানোর জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করার চিন্তাভাবনা করছে সরকার’ এদিকে শবর মৃত্যু নিয়ে আলোচনা চেয়ে বিধানসভা নোটিস দিয়েছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির পর আর আলোচনার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়ে দেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির পরই অধিবেশন থেকে একযোগে ওয়াকআউট করেন বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা। আগামী ২২ নভেম্বর পর্যন্ত বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিরোধীরা।
[ কাটল আইনি জটিলতা, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে জমির মালিকানা পেলেন ছিটমহলবাসী]
ঝাড়গ্রাম জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে লোধা-শবরদের বাস। আদিবাসী জনজাতির এই মানুষগুলিকে হতদরিদ্র বললেও কম বলা হয়। কেউ অন্যের জমিতে মজুরের কাজ করেন, কেউ আবার জঙ্গল থেকে কাঠ-পাতা কুড়িয়ে দিন গুজরান করেন। স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে শবর সম্প্রদায়ের মানুষেরা দিনরাত নেশায় বুঁদ হয়ে থাকেন।রাজ্যে পালাবদলের পর, লোধা-শবরদের জন্য একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প চালু করেছে সরকার। শুধু চাষের জমি কিংবা বাড়িই নয়, সরকারি প্রকল্পে রেশন, বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ, এমনকী, শবর সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা স্কুলে নিঃখরচায় পড়াশোনাও করতে পারে। কিন্তু, যাঁদের জন্য সুযোগ-সুবিধার বন্দোবস্ত করেছে সরকার, তাঁরাই সুবিধা নিতে আগ্রহী নন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে চলতি মাসের তিন থেকে এগারো তারিখ পর্যন্ত লালগড়ের পূর্ণাপণি গ্রামে আবার শবর সম্প্রদায়ের চারজন মারা গিয়েছেন। এর আগেও ওই সম্প্রদায়ের আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছিল বলে খবর। শবর সম্প্রদায়ের সাতজনের মৃত্যু হয়েছে অনাহারে, এ অভিযোগে সরকারকে বিদ্ধ করেছে বিরোধীরা।
মঙ্গলবার জঙ্গলমহলের শবর-মৃত্যু নিয়ে বিধানসভায় আলোচনার দাবি জানান বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা। নিয়মমাফিক সোমবার নোটিসও দিয়েছিলেন তাঁরা। বিরোধীদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, মঙ্গলবার বিধানসভায় নিজে থেকেই শবর মৃত্যু নিয়ে বিবৃতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। অনাহারে মৃত্যুর তত্ত্ব খারিজ করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়ে দেন,
‘যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই রেশন কার্ড ছিল। রেশন থেকে চালও নিয়েছিলেন তাঁরা। অনাহারে মারা গিয়েছেন, একথা ঠিক নয়। এ রাজ্যে এখন সবাই খেতে পান।’ মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির পরই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বিরোধীরা। একযোগে অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা। বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভও দেখান তারা।
আগামী ২২ নভেম্বর পর্যন্ত বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাম ও কংগ্রেস। তাঁদের অভিযোগ, শবর মৃত্যু নিয়ে অধিবেশনে আলোচনার সুযোগ না দিয়েই বিধানসভায় বিবৃতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীদের আলোচনার নোটিস অমান্য করেছেন তিনি।
[ ‘বিজেপি মিটিং-মিছিলের অনুমতি পেলেও, পাচ্ছে না সিপিএম’, অভিযোগ সূর্যর]\
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.