সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হৃদয় ব্যথিত হায়দরাবাদ দেখে, কষ্ট হয়েছে উন্নাওয়ের নির্যাতিতার পরিণতি দেখে। গায়ে আগুন নিয়ে মেয়েটা দৌড়চ্ছিল, কেউ সাহায্য করেনি। এটা জানার পর অন্তরে বেদনা অনুভব করেছেন। কিন্তু এসবের পরও পুলিশের এনকাউন্টারে হায়দরাবাদ গণধর্ষণকাণ্ডের ৪ অভিযুক্তের খতম হওয়ার ঘটনায় কোথাও একটা প্রশ্নচিহ্ন রেখেই গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, মেয়ো রোডে সংহতি দিবসের সভায় যোগ দিয়ে তিনি স্পষ্টই বললেন, ‘এর বিচারের জন্য আইনকে আরও কড়া হতে হবে। দ্রুত আদালতে চার্জশিট পেশ করে আইনের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।’ তাহলে কি আইনের পথেই হায়দরাবাদের অভিযুক্তদের শাস্তি চাইছিলেন? এনকাউন্টার সমর্থন করছেন না? মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে এই প্রশ্নের অবকাশ রয়েই যাচ্ছে।
৬ ডিসেম্বর দিনটিকে প্রতি বছর ‘সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে তৃণমূল। এবারও মেয়ো রোডে সেই বিশেষ জনসভা। সম্প্রীতির বার্তা দেওয়ার চেয়েও এই মুহূর্তে গভীর, গুরুতর সংকট পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, হায়দবারাদের পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘিরে। তাতে সাম্প্রতিকতম সংযোজন, বিচারের আগেই পুলিশের এনকাউন্টারে চার অভিযুক্তের খতম হওয়া। তৃণমূলের সংহতি দিবসের মঞ্চেও প্রতিধ্বনিত হল সেই একই ঘটনার রেশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘হায়দরাবাদ থেকে উন্নাওয়ের ঘটনা, আমার হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে। আমি এসব নিয়ে বিশেষ বলি না, যেহেতু অন্য রাজ্যের ব্যাপার। কিন্তু এগুলো তো স্পর্শকাতর বিষয়। আমার খারাপ লেগেছে যে উন্নাওয়ের মেয়েটি অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ছুটেছে, কেউ সাহায্য করেনি। এর জন্য আইনকে আরও কড়া হতে হবে। আমাদের রাজ্যে আমি এটা করেছি। এখানে ৮৫টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট আছে। পুলিশের কাছে আমার কড়া নির্দেশ, এসব অভিযোগ হাতে পেলে দ্রুততার সঙ্গে গ্রেপ্তার করে দ্রুত চার্জশিট পেশ করতে হবে। ৩ থেকে ১০ দিনের মধ্যে গোটা ব্যাপারটার নিষ্পত্তি করতে হবে। আর যে এটা করবে না, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তাঁর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে মালদহেও হায়দরাবাদের পুনরাবৃত্তি হয়েছে। সেক্ষেত্রে রাজ্য পুলিশের ভূমিকা কী? এই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বলেন, ‘মালদহের ঘটনায় কি আপনারা ভাবছেন, আমরা চুপচাপ বসে আছি? তা নয়। আমরা সব দেখছি। পুলিশ কড়া নজর রেখেছে। ময়নাদতদন্তের রিপোর্ট আসার অপেক্ষা করছি। আমরা দোষীদের নিরাপত্তা দিই না। কড়া আইন করে শাস্তি দেওয়া হবে।’
এরপরই মমতার গলায় উঠে আসে এনআরসি এবং সিএবি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সুর। প্রশ্ন তুললেন, ‘ধর্মের ভিত্তিতে কেন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল? এনআরসি আমরা করতে দেব না। উত্তরপূর্বের মানুষনজনও এটা মানবেন না। বুকের পাটা থাকলে জাতিধর্ম নিরপেক্ষভাবে সকলকে নাগরিকত্ব দিয়ে দেখাক। সেক্ষেত্রে আমরাই সমর্থন করব।’ জানালেন যে শুধুমাত্র এনআরসি-র আতঙ্কেই রাজ্যে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.