গৌতম ব্রহ্ম: ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে তুঙ্গে রাজ্য-কেন্দ্র সংঘাত। শনিবার ফের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চার পাতার ওই চিঠিতে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের দাবিকে নস্যাৎ করেছেন তিনি। রাজ্যকে কার্যত অন্ধকারে রেখে ডিভিসি জল ছাড়ে বলেই দাবি তাঁর।
মমতা এবার চার পাতার একটি চিঠি লেখেন। তিনি চিঠিতে দাবি করেন, “জলশক্তি মন্ত্রকের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আমি এই চিঠি লিখছি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেছেন ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ন্ত্রণ কমিটিতে বাংলার প্রতিনিধিও রয়েছেন। আমি তা মানতে পারছি না। এক্ষেত্রে সব সময়ই কেন্দ্রীয় জল কমিশন এবং জলশক্তি মন্ত্রকই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়। রাজ্যকে না জানিয়েই জল ছাড়া হয়। ” এর পর তারিখ উল্লেখ করে জল ছাড়া সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন মমতা। তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন, “গত ১৬ সেপ্টেম্বর ডিভিসির চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা হলেও, তিনি তা শোনেননি। রাজ্যের তরফে আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। প্রথমে ২.৩ লক্ষ কিউসেক এবং পরে ২ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার অনুরোধ রাখা হয়নি। ডিভিসি সময়মতো উত্তর না দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। সম্প্রতি মাত্র সাড়ে ৩ ঘণ্টা নোটিস দিয়ে ৯ ঘণ্টা জল ছাড়া হয়েছে।” মমতার বিস্ফোরক দাবি, “আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার প্রয়োজনই ছিল না। আর এত বিপুল পরিমাণ জল ছাড়া না হলে দক্ষিণবঙ্গে এহেন বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হত না।” ডিভিসির কমিটি থেকে প্রতিনিধি তুলে নেওয়ার কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেন মমতা।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হয় দক্ষিণবঙ্গে। তার পরই জল ছাড়ে ডিভিসি। জলমগ্ন হাওড়ার আমতা, উদয়নারায়ণপুর, হুগলির খানাকূল, পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল। বিপর্যস্ত জনজীবন। নিজেই প্লাবন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। ডিভিসির সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও জানিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী অবশ্য সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছিলেন। এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি নস্যাৎ করে ফের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন মমতা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.