সন্দীপ চক্রবর্তী ও সুনীপা চক্রবর্তী: ডাক্তার ওষুধ দিলেও যদি কেউ না খায়, তাহলে কী করব? লালগড়ে শবরদের মৃত্যু নিয়ে প্রতিক্রিয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বুধবার লালগড়ের পূর্ণাপণি গ্রামে যান বিনপুর এক নম্বর ব্লকের বিডিও, জেলা পরিষদের সভাপধিপতি-সহ ব্লক প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকরা। প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল ও দুপুরে ভরপেট খান শবর সম্প্রদায়ের মানুষেরা।
[এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে ক্লাবগুলি ভূমিকা নিক, আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর]
ঝাড়গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে লোধা-শবরদের বাস। আদিবাসী জনজাতির এই মানুষগুলিকে হতদরিদ্র বললেও কম বলা হয়। কেউ অন্যের জমিতে মজুরের কাজ করেন, কেউ আবার জঙ্গল থেকে কাঠ-পাতা কুড়িয়ে দিন গুজরান করেন। স্কুলে যাওয়া তো দূরের ব্যাপার, অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে যায় শবর পরিবারের ছেলেমেয়েদের। স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই দিনভর নেশায় বুঁদ হয়ে থাকেন। রাজ্যের পালাবদলের পর শবর-লোধাদের উন্নয়নে একাধিক প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। শুধু চাষের জন্য জমি কিংবা বসতবাড়িই নয়, সরকারি প্রকল্পে রেশন, বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ, এমনকী, শবর সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েরা নিখরচায় স্কুলে পড়াশোনাও করতে পারে। কিন্তু, যাঁদের জন্য প্রকল্প চালু করেছে সরকার, তাঁরাই প্রকল্পের সুবিধা নিতে আগ্রহী নন। উলটে সরকারি প্রকল্পে পাওয়া সামগ্রী শবর সম্প্রদায়ের মানুষেরা বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ। চলতি মাসে তিন থেকে এগারো তারিখ পর্যন্ত লালগড়ের পূর্ণাপণি গ্রামে শবর সম্প্রদায়ের চারজন মারা গিয়েছেন। ঘটনাটি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যে। শুধু প্রকল্প চালু নয়, শবরদের উপর প্রশাসনিক নজরদারিরও দাবি উঠেছে।
বুধবার নবান্নে বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘জঙ্গলমহলের উন্নয়নের জন্য একাধিক প্রকল্প চালু করেছে সরকার। লোধা-শবর সম্প্রদায়ের মানুষদের ৮ টাকা কেজি দরে চাল ও ৩ টাকা কেজি দরে গম দেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ওষুধ দিলেও যদি কেউ না খায়, তাহলে কী করব!’ এদিকে লালগড়ের শবর সম্প্রদায়ের চারজনের মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসেছে জেলা ও ব্লক প্রশাসনও। লালগড়ের পূর্ণাপণি গ্রামে গিয়ে শবরদের খোঁজ খবর নিয়েছেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি। বেশ কয়েকজনকে তিনি হাসপাতালেও ভরতির ব্যবস্থা করেছেন বলে খবর।
ছবি: প্রতীম মৈত্র
[ ঘূর্ণিঝড় ‘গাজা’র ধাক্কা, বৃহস্পতিবার থেকে উধাও শীতের শিরশিরানি]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.