সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। পুজোর আগে শহরবাসীর জন্য বড় উপহার। নতুন টালা ব্রিজ (Tala Bridge) খুলে গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। বৃহস্পতিবার পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ টালা ব্রিজের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তর কলকাতা ও শহরতলির যোগাযোগ একেবারেই সহজ হয়ে গেল এই ব্রিজ ফের খুলে যাওয়ায়। ২০২০ সালে ব্রিজটা ভাঙার কাজ শুরু হয়। প্রায় আড়াই বছর পর নতুন রূপে ফের খুলল ‘হেমন্ত সেতু’। এদিন সেতুর উদ্বোধনে হাজির ছিলেন রেলের প্রতিনিধিরাও। অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, টালা ব্রিজ সংলগ্ন রেলের (Rail) জমিটি রাজ্য কিনতে চায় দরিদ্র মানুষজনের মাথার উপর ছাদ তৈরি করে দেওয়ার জন্য। সেই জমি বিক্রিতে রেল যাতে রাজি থাকে, ডিআরএমের (DRM) কাছে সেই আবেদন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
পুজোর আগেই যে নতুন টালা ব্রিজ খুলে দেওয়া হবে, তা জানাই ছিল। বিশেষজ্ঞদের চূড়ান্ত রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়ায় উদ্বোধন আরও পিছিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল। তবে সময়মতো সমস্ত কাজ হওয়ায় মহালয়ার আগেই যান চলাচল শুরু হল ‘হেমন্ত সেতু’তে। চার লেনের ব্রিজে এখনই ভারী গাড়ি চলাচল করবে না। পরে সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা, ভারবহনের ক্ষমতা পরীক্ষা করে তবে পণ্যবাহী গাড়ি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
টালা ব্রিজের পুনর্গঠনে রেলের ভূমিকার কথা জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”৪ মাস ধরে ভাঙার কাজ করেছে রেল। পিডব্লুডি-কে বলেছিলাম, তাড়াতাড়ি কাজ করো। ববি-পুলক-অরূপ সবাই খুব সাহায্য করেছে। এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ। তবে শুনেছি স্থানীয়দের কিছু কিছু সমস্যা আছে। পিডব্লুডিকে বলেছি, ২,৩ মাসের মধ্যে সমস্ত কাজ করে দেবে। এই ব্রিজ তৈরির পুরো টাকা রাজ্য দিয়েছে। ভেবেছিলাম, রেল সোশ্যাল ওয়ার্ক হিসেবে টাকা নেবে না। কিন্তু ৯০ কোটি টাকা নিয়েছে রেল।”
এরপরই তিনি মঞ্চে উপস্থিত রেলের ডিআরএমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “এখানে ১৪৫ টি গরিব পরিবার আছে। রেলের এখানে যে জমি আছে, সেটা কিনতে চাই আমরা। সেই জমিতে এঁদের জন্য বাড়ি বানিয়ে দিতে চাই। কারণ, রাজ্যের এখানে আর কোনও জমি নেই। রেলের জমি না পেলে তাঁদের খালের ধারেই বাড়ি বানিয়ে দিতে হবে। রেলের কাছ থেকে আমরা টাকা দিয়ে জমিটা কিনব, টাকাপয়সার কোনও সমস্যা হবে না।” এরপর তিনি ফিরহাদ হাকিমকে বলেন, ”এই ব্যাপারটা দেখো। এর জন্য টাকাপয়সা নিয়ে ভেবো না। এটা গরিব মানুষের কাছে আমার প্রতিজ্ঞা। যা খরচ হয় হোক, ওদের মাথার উপর ছাদ করে দেব আমরা।”
শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নতির জন্য আগামী দিনে উত্তর কলকাতায় তিনটি উড়ালপুলের প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছেন, আর্থিক পরিস্থিতি অনুকূল হলে এসব তৈরি হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষের সঙ্গে রসিকতাও করলেন। তাঁর কথায়, ”অতীন আগে উত্তর-দক্ষিণ করত। এখন যখন টালা ব্রিজ করে দিলাম, তখন তো আর কিছু বলছো না। উত্তর কলকাতায় এখন অনেক কিছু হচ্ছে। আরও হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.