স্টাফ রিপোর্টার: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুতীক্ষ্ম পর্যবেক্ষণের জেরে বড়মাপের শারীরিক অসুস্থতা থেকে রক্ষা পেলেন বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পাল। বর্তমানে তিনি ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মঙ্গলবার হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘‘বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করেছিল। কিন্তু সময়ে চিকিৎসা শুরু করতে পারায় আপাতত বিপদ কেটে গিয়েছে। স্থিতিশীল আছেন বিধায়ক। তাঁর চিকিৎসার জন্য একটি মেডিক্যাল বোর্ডও তৈরি করা হয়েছে।’’
মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে সোমবার নবান্নে একটি জরুরি বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে বৈঠকে আসেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার ও কুণাল ঘোষ। বৈঠক শুরুর মিনিট দশেক পর নবান্নের ওই বৈঠকে প্রবেশ করেন পরেশ পাল। কিন্তু তাঁর হাঁটাচলা ও কথাবার্তা এবং চোখমুখ দেখেই মুখ্যমন্ত্রী বলে ওঠেন, ‘‘পরেশের শরীর ঠিক নেই, ওঁর শরীরের ভিতর কিছু একটা অসুস্থতা চলছে। এক্ষুনি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাও।’’ একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নামও বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীই দফতর মারফত জেনে নেন, ওই ডাক্তার বাইপাসের ওই হাসপাতালেই তখন কর্তব্যরত আছেন। বৈঠক শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কুণাল ঘোষ ও স্বপন সমাদ্দার মারফত পরেশকে ওই ডাক্তারের কাছে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী।
হাসপাতালে পৌঁছেই প্রথমে সিটি-স্ক্যান ও পরে এমআরআই করে দেখা যায়, সময়ে ওষুধ না খাওয়ার জেরে মস্তিষ্কে অল্প অল্প করে রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করেছে বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়কের। চিকিৎসকের কথায়, ‘‘যখন হাসপাতালে পরেশবাবু আসেন তখন তাঁর রক্তচাপ ছিল ২০০/১০০। এমন মাত্রা খুবই অস্বাভাবিক এবং বড়মাপের অঘটন ঘটতে পারত। মুখ্যমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণের জেরেই বিষয়টি ধরা পড়ায় বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেলেন বিধায়ক।’’
হাসপাতাল থেকেই পরেশের ভর্তি ও চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দেন কুণাল। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে কুণাল জানান, ‘‘মমতাদির অসাধারণ পর্যবেক্ষণের জন্য বড় বিপদ থেকে পরেশদাকে রক্ষা করা গেল। কাল নবান্নের বৈঠকেই দেখলাম, পরেশদার অসুস্থতা নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ কেমন ম্যাজিকের মতো কাজ করে গেল।’’ এদিনও সন্ধ্যায় ফের হাসপাতালে গিয়ে পরেশকে দেখে আসেন কুণাল। নবান্নের বৈঠক থেকে বেরিয়ে ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ ও সুপ্তি পাণ্ডেও গিয়েছিলেন পরেশ পালের সঙ্গে দেখা করতে। হাসপাতালে সূত্রে জানানো হয়েছে, আইসিইউ থেকে এদিনই সাধারণ কেবিনে দেওয়া হয়েছে বেলেঘাটার বিধায়ককে। রক্তচাপের ওষুধ সময়ে না খাওয়ার কারণে এমন অসুস্থতা শুরু হয়েছিল তাঁর। এখন পরেশের কথাবার্তা, খাওয়া-দাওয়া সবই স্বাভাবিক হচ্ছে। দু-একদিনের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.