ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: টানা ৩০ ঘণ্টা ধরে ধরনা। সেখান থেকে কড়া আক্রমণ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে, বিরোধীদের একজোট হয়ে দিল্লিতে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি। উদ্দেশ্য একটাই, কেন্দ্রের কাছ থেকে বকেয়া টাকা আদায় এবং তা রাজ্যবাসীর জন্য কাজে লাগানো। তা সত্ত্বেও চুপ কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার সন্ধে নাগাদ ধরনা শেষের বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সুরে ঝরে পড়ল সেই আক্ষেপ, সঙ্গে ক্ষোভও। এরপরই সমস্ত বিরোধীদের নিয়ে দিল্লিতে বড়সড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি।
রাজ্যের একাধিক প্রকল্পের টাকা বকেয়া কেন্দ্রের কাছে। সেই টাকার পরিমাণ বাড়ছে তো বাড়ছেই। তা নিয়ে বারবার কেন্দ্রের কাছে দরবার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। একাধিকবার চিঠি লেখা, এমনকী দিল্লিতে (Delhi) গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে পাওনা আদায়ের কথাও বলেছেন। প্রতিবারই মিলেছে আশ্বাস, তবে বাস্তবে ‘হাতে রইল পেনসিল’। কখনও দুর্নীতির অভিযোগ, কখনও আবার অসম্পূর্ণ রিপোর্টের ‘ছুঁতো’য় দিল্লি থেকে নবান্নে (Nabanna) টাকা এসে পৌঁছয়নি। এতদিন ধরে বঞ্চনার প্রতিবাদে আরও কঠোর কর্মসূচি নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেড রোডে ২৯ ও ৩০ মার্চ দু’দিন ধরে ধরনায় (Dharna) বসেন তিনি।
আর ৩০ ঘণ্টা পর ধরনা থেকে উঠে যাওয়ার সময় তাঁর বক্তব্যে ফের দিল্লির অসহযোগিতা নিয়ে রোষ আছড়ে পড়ল। বললেন, ‘‘আমি আজ পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলাম। ভেবেছিলাম কেন্দ্র ফোন করে বলবে, তোমাদের প্রাপ্য টাকা দেব। কিন্তু কিছুই নেই। সব ভোঁ-ভাঁ।ভেবেছিলাম, কোনও একজন কুচো নেতাও ফোন করে বলবেন, তাঁরা বিষয়টি দেখছেন। কিন্তু কেউ একটা ফোনও করলেন না!’’ এতে যারপরনাই বিস্মিত তিনি। শুধু অসহযোগিতা নয়, বিষয়টিকে অভদ্রতার মোড়কেও দেখা হচ্ছে।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে কেন্দ্র তথা কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির উপর চাপ সৃষ্টি করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ধরনা শুধু রাজ্যেই নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ছিল নিঃসন্দেহে। তবে এতে দাবি আদায় না হওয়ায় খানিকটা হতাশ হলেও লড়াই ছাড়ার পাত্রী যে তিনি নন, বুঝিয়ে দিলেন আবার। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত, তাঁর দৃষ্টি বহু দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। চব্বিশের লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে আপাতত যাবতীয় রাজনৈতিক ঘুঁটি সাজাতে চান তিনি। তাই তো বারবার বিরোধী ঐক্যের কথা শোনা যাচ্ছে তাঁর গলায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.