স্টাফ রিপোর্টার: দলীয় কোনও সাংসদ, বিধায়ক নিজে থেকে গাড়িতে লালবাতি, নীলবাতি লাগাতে পারবেন না বলে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পাশাপাশি দলীয় শৃঙ্খলার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেছেন, ”একমাস সময় দিলাম। যার যেখানে যা বিরোধ আছে সব মিটিয়ে নিন। কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, একে অপরের বিরুদ্ধে বিবৃতি চলবে না। সবাইকে এক হয়ে চলতে হবে।”
বৃহস্পতিবার বাইপাসের ধারে অস্থায়ী তৃণমূল (TMC) ভবনে ছিল রাজ্য কমিটির বৈঠক। অক্ষয় তৃতীয়ায় উদ্বোধন হওয়ার পর এদিনই প্রথম মমতা সেখানে আসেন। গাড়িতে বাতির প্রসঙ্গ নিজেই তুলে বলেন, ‘‘আমিও আমার গাড়িতে কোনও বাতি লাগাই না। এমএলএ, এমপিরা নিজে থেকে কেউ বাতি লাগাবেন না। কার কী লাগবে, সেটা পুলিশ দেখে নেবে।’’
রাজ্য কমিটির বৈঠকে ছিলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ (Abhishek Banerjee) সমস্ত নেতৃবৃন্দ। ওই সভায় অভিষেক বলেন, ‘‘এখন থেকে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। ’১৮ সালের মতো ভোট ’২৩-এ হবে না। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে সামনে রেখে আমাদের মানুষের কাছে যেতে হবে। জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যানরা বাড়ি থেকে কেউ দল চালাবেন না। নির্দিষ্ট পার্টি অফিস আছে। সেখানে যেতে হবে।’’
এদিকে, তৃণমূলের সমস্ত কমিটি, শাখা সংগঠনের জেলা নেতৃবৃন্দদের নাম ২০ মে-র পর ঘোষণা করা হবে। ওই তারিখ পর্যন্ত সমস্ত সাজেশনগুলি নেওয়া চলবে। এদিনের সভায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করতে কঠোর ভূমিকা নেন তৃণমূলনেত্রী। অভিভাবকের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার, সমস্ত নেতৃবৃন্দকে এক হয়ে চলতে হবে। একা চলবেন না কেউ। সবাইকে নিয়ে চলুন। কোনও জেলায়, কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত হবে না। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা মানতে হবে।’’
মমতা আরও বলেন, ‘‘ভাববেন না আমি মুখ্যমন্ত্রিত্ব চালাচ্ছি বলে দলের ভিতরের খবর রাখি না। কোথায় কী হচ্ছে, আমি সব খবর রাখি। অভিযোগ এলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই না। তিন-চারবার ক্রস চেক করি। তারপর ব্যবস্থা নিই। আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছি, মানুষের জন্য যিনি কাজ করবেন না, তাঁর বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে। আমাদের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি আছে। সেখানে অভিযোগ জানানো যাবে।’’
এই প্রসঙ্গেই এদিন জানানো হয় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির নতুন চেয়ারম্যান হচ্ছেন সুব্রত বক্সি। একদিকে যখন শৃঙ্খলা রক্ষায় জোর দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে এদিন বলে দেওয়া হয়, দলকে না জানিয়ে কোথাও কোনও জয়েনিং করানো যাবে না। এক সাংসদ দলকে না জানিয়ে অন্য দলের কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন। দলনেত্রী বলে দেন, দলকে না জানিয়ে অন্য দলের কর্মসূচিতে যাওয়া যাবে না। এদিকে, এই সভায় সভাপতিত্ব করেন সুব্রত বক্সি। আগামিদিনে কীভাবে দল চলবে সেই রূপরেখা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কুৎসা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপিকে বাংলায় জায়গা দেওয়া যাবে না। সিপিএমকেও কোনওমতে কেউ জায়গা ছাড়বেন না। কারণ, ওরা বিজেপির লিঙ্কম্যান।’’
এদিন মমতা নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক সরকারি অনুষ্ঠানে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘‘অন্যায় করলে অন্য কোনও দল ব্যবস্থা নেয় না। আমরা নিই। তখন আমি সবচেয়ে খারাপ লোক। বাংলায় কোনও জাত, ধর্ম, বিভাজনের রাজনীতি চলবে না।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.