স্টাফ রিপোর্টার: রাজ্যের ‘বাংলা‘ নামকরণ ও মাদ্রাসায় শিক্ষার আড়ালে জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে তুলোধোনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের শাসকদল ‘বাংলা’ নামকরণে ‘গাজোয়ারি’ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে শুক্রবার ফের কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ করেন, “বিল আনুন। বাংলাকে অধিকার দিন।” পাশাপাশি যেভাবে মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষার আড়ালে জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ করেছে কেন্দ্র, তাও মানতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী। প্রশ্ন করেন, কেউ চোর হলে তার গোটা জাতই কি চোর?
রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করার জন্য বিল আনা হয়েছিল বিধানসভায়। কেন্দ্রের সুপারিশে ফের সংশোধন করা হয় তাতে। এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গত কয়েকবছর ধরে চেষ্টা করছি। প্রথমে যখন বাংলা চাই, তখন হিন্দিতে বঙ্গাল, ইংরেজিতে বেঙ্গল বলি। ওরা বলে, একটাই নাম চাই। আমি আশ্চর্য। পরশু প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছি। কেন এমন করছেন জানি না। আমরা সব ভাষাকে শ্রদ্ধা করি। আমরা বলব, বাংলা ভাষাকে রাখুন। বাংলা বিশ্বের পঞ্চম ভাষা। এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা এটি। ওটা বাংলাদেশ। আর এটা বাংলা রাজ্য। বিজেপি বলছে, করতে দেব না। যেন গায়ের জোর। অনুরোধ করব, এটা করতে দিন। বিল আনুন। বাংলার অধিকারকে এনে দিন।”
অন্যদিকে, ধর্মীয় শিক্ষার নামে জঙ্গি কাজকর্ম ও প্রশিক্ষণের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, এই ধরনের প্রশ্ন ওঠেই না। এমন কিছুই হয়নি। আমরা যে তথ্য দিচ্ছি, তা না বলে রাজনৈতিকভাবে একটা দল, বিজেপি ফিড দিচ্ছে। তাকে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে আমরা সহমত নই। সমাজবিরোধী, সন্ত্রাসবাদকে ধর্মের সঙ্গে মেলানো ঠিক নয়। রাজ্যে প্রায় ১৩০০ মাদ্রাসা রয়েছে। সবাই সন্ত্রাসবাদের জন্ম দিচ্ছে এটা বলা ঠিক নয়। এটা তো অসম্মান করা। আমেরিকায় বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে উগ্রপন্থী সংগঠন বলা হয়। আমরা মনে করি, চোর চোর, ডাকাত ডাকাতই। তার জাত কী? নজরুল বলেছিলেন, জাতের নামে বজ্জাতি সব। ওরা তাই করছে। আমরা তো বলছি, যদি কেন্দ্র এমন কিছু জানে তো ব্যবস্থা নেবে। আমাদেরও বলবে। কিন্তু, এটা কী হচ্ছে! কোথায় চলেছি? এভাবে তো সব শেষ হয়ে যাবে। ধর্মের নামে ভাগাভাগি ঠিক নয়। বাংলায় সব ধর্ম ও সংস্কৃতি এক। এটা গর্ব। সব দপ্তরে চিঠি পাঠাচ্ছে, যাতে সবাইকে ‘ডিস্টার্ব’ করা যায়। এজেন্সির চিঠি দিচ্ছে।”
এই প্রসঙ্গে আলোচনার সময় সাংবাদিকদের রক্ষাকবচ নিয়েও আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর জন্য মিডিয়া বিল আনা হবে বলেও জানান। বলেন, “সাংবাদিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.