অর্ণব আইচ: পালিয়ে গিয়েও শেষ রক্ষা হল না। ওড়িশা থেকে ফিরে গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী পুত্র সন্তোষ সাহানি। শনিবার সকালে সন্তোষের বেপরোয়া গতির বলি হন এক শিক্ষিকা। কালীঘাটে সকালে বন্ধুদের সঙ্গে হাঁটতে বেরিয়ে গাড়ির ধাক্কায় মারা যান স্কুল শিক্ষিকা। এরপরই ধরা পড়ার ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান অভিযুক্ত ব্যবসায়ী পুত্র। জানা যায়, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন ওই যুবক।
শনিবার সকালে হাজরা মোড় থেকে রাসবিহারী অ্যাভিনিউ যাওয়ার পথে কালীঘাট ট্রাম ডিপোর কাছে শিক্ষিকা শুভলক্ষ্মী বন্দ্যোপাধ্যায়কে গাড়ি দিয়ে ধাক্কা মারে সন্তোষ সাহানি। দুর্ঘটনার জেরে গাড়ির বনেটের ওপর উঠে যান শিক্ষিকা। ওই অবস্থাতেও গাড়ির না কমায় গাড়ি থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান মহিলা। রাসবিহারি অ্যাভিনিউয়ের ক্রসিংয়ের কাছে গাড়িটি থামাতে গেলে আরেক পুলিশ কর্মীকে ধাক্কা দেয় গাড়িটি। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মহিলার মৃত্যু হয়। ট্রাফিক বিভাগের ফ্যাটাল স্কোয়াড এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে। গাড়ির নম্বরের সূত্র ধরে খিদিরপুরে কার্ল মার্ক্স সরণিতে সাহানিদের বাড়িতে যায় পুলিশ। গাড়িটি আটক করে পুলিশ পরিবারের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
এরপরেই জানা যায়, শনিবার সকালে রবীন্দ্র সরোবরে মর্নিং ওয়াকের জন্য গাড়ি নিয়ে বের হন সন্তোষ। এরপর নিজের দুই বন্ধুকে গাড়িতে তোলেন সন্তোষ। দুর্ঘটনার পর বাড়ি ফিরে পরিবারের সকলকে সেই কথা জানায়। ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকার জন্য গা ঢাকা দিতে বাড়ি ছেড়ে ওড়িশায় পালিয়ে যায় সে। পরে তাঁর পরিজনেরাই তাঁকে কলকাতায় ফিরে আসতে বলেন। এরপর ছেলেকে নিয়ে লালবাজারে যান তাঁর বাবা। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে জেরায় সন্তোষ নিজের দোষের কথা কবুল করে। এমনকি সে জানায়, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোই তাঁর একমাত্র নেশা। পুরো ঘটনাটি জানতে সন্তোষের দুই বন্ধুকেও ডাক করা হয় লালবাজারে।
ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩০৪(২) ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুন, বেপরোয়া গাড়ি চালানোয় ২৭৯ ধারা ও লাইসেন্স না থাকার জন্য ১৮১ এমভি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিন সন্তোষকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে ৪ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। সন্তোষ সাহানির গাড়িটির বিরুদ্ধে এখনও ১৪টি বিভিন্ন ট্রাফিক মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও এই শহরে বেপরোয়া গতির বলি হয়েছেন অনেকেই। তবুও গতি কমার কোনও লক্ষ্মণ নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.