সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মদন মিত্র বনাম এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের টানাপোড়েন আরও তীব্রতর হল। সরকারি হাসপাতালের ‘অব্যবস্থা’ নিয়ে সরব হয়েছিলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়কের তোলা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জটিলতা বাড়ল। তাঁর বক্তব্যের বিরোধিতা করে এসএসকেএমের (SSKM) থানায় অভিযোগ জানানো মোটেই ভালভাবে নেননি তিনি। এসএসকেএমের অধিকর্তা ডাঃ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তার পালটায় মদন মিত্রর (Madan Mitra) হুঁশিয়ারি, ”কোনও চাকরবাকরের কথা সহ্য করব না। আবার যদি কারও বিপদ হয়, আমি আবার এসএসকেএমে ভরতি করাতে যাব। তাতে যদি কেউ ডান্ডা মারে, গ্রেপ্তার করে, তাতেও কিছু যায় আসে না। আমি তো দু, তিনটে পাঞ্জাবি নিয়ে ঘুরছি, গ্রেপ্তার হতে পারি বলে। প্রয়োজনে যদি আমাকে বিধানসভার সদস্যপদ ছাড়তে হয়, তাও ছাড়ব।”
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাতে। বাইক দুর্ঘটনায় (Accident) শুভদীপ পাল নামে এক যুবক জখম হন। তিনি চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যালের ল্যাব টেকনিশিয়ান। তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করাতে যান খোদ মদন মিত্র। কামারহাটির বিধায়কের দাবি, প্রায় ছ’ঘণ্টা অ্যাম্বুল্যান্সেই শুভদীপকে রেখে দেওয়া হয়। হাসপাতালে ঢোকার মুখে পুলিশ এবং কর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। মেডিক্যাল অফিসারকে ডাকেন। তাঁর প্রশ্ন, “ল্যাব টেকনিশিয়ানের যদি এই অবস্থা হয় তবে সাধারণ মানুষের কী হবে?” এসএসকেএমে দালালরাজের মতো বিস্ফোরক অভিযোগও করে হাসপাতাল বয়কটের ডাক দেন বিধায়ক।
এরপর এসএসকেএমের তরফে অধিকর্তা ডাঃ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুক্রবার রাতের ঘটনা অনভিপ্রেত। মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই ধরনের ব্যবস্থার ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি মুখ্যমন্ত্রীর। এসএসকেএম হাসপাতালেরও তাই। ঘটনার অবশ্যই তদন্ত হবে। এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার সেন্টারের সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে পালটা আসরে নামেন কামারহাটির জনপ্রিয় বিধায়ক।
সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ”এসএসকেএমের সঙ্গে আমি তৃণমূলের পরিচয় করিয়েছি। একসময় আমি আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিলে একজনকে নিয়ে গিয়েছিলাম। তাকে কোপানো হয়েছিল, সারারাত ধরে বসেছিলাম। এখন মুখ্যমন্ত্রীর চারপাশে যারা ঘুরছে, সেসব চাকরবাকরের কথা আমি সহ্য করতে পারব না। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়নি, কিন্তু এটাই বলতে চাই।” এরপর তিনি কুণাল ঘোষকে নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, ”আমার দলের মুখপাত্র, তাঁর বিরুদ্ধে ৪৫০ অভিযোগ আছে।” মদন মিত্রর এই ক্ষোভ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কুণাল ঘোষও। বিষয়টি তিনি সহানুভূতির দৃষ্টিতেই দেখেছেন। তাঁর বক্তব্য, ”এসএসকেএম নিয়ে মদন মিত্রর আলাদা সেন্টিমেন্ট আছে, তাই সাময়িকভাবে মাথাগরম হয়েছিল। রাগ কমলে সব ঠিক হয়ে যাবে। তবে গোটা ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁরা যেভাবে উপস্থাপিত করেছে, তাও ভুল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.