দীপঙ্কর মণ্ডল: গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ইটাহারে ডিউটিতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছিল প্রিসাইডিং অফিসার তথা রায়গঞ্জের বাসিন্দা রাজকুমার রায়ের। নির্বাচনী সন্ত্রাসের বলি হয়েছিলেন তিনি৷ এবারের লোকসভা নির্বাচনে সেই অভিশপ্ত দিন ফিরে পেতে চান না ভোটকর্মীরা৷ সেজন্য সমস্ত বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন এবং অবাধ নির্বাচনের দাবিতে শনিবার চেতলা গার্লস স্কুলে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা৷ স্লোগান দিলেন, ‘‘কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার, চাই না হতে রাজকুমার।’’
এদিন দক্ষিণ কলকাতার চেতলা গার্লস স্কুলে প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিলেন ভোটকর্মীরা৷ যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন পেশায় শিক্ষক৷ বাকিরা বিভিন্ন সরকারি পদে কর্মরত৷ সেখানেই মূলত পাঁচ দফা দাবিতে কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হন ভোটকর্মীরা৷ তাঁরা জানান, নির্বাচন কমিশনকে প্রত্যেকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে৷ প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে৷ ভোটারদের ভোটদানের অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে৷ নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে৷ এবং সর্বোপরি, যাঁরা আইনকানুন হাতে তুলে নেবে, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে৷ উচ্চতর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গলা চড়িয়ে এদিন ভোটকর্মীরা জানান, ‘‘ভোটের দিন বাড়ি থেকে বেরোলে, পরিবারের সদস্যরা ভয়ে ভয়ে থাকেন৷ তাঁরা আশঙ্কা করেন বেঁচে বাড়ি ফিরব কিনা৷ এই ধরনের পরিবেশে আমরা কাজ করতে পারব না৷’’ কমিশনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে এদিন ভোটকর্মীরা জানান, পাঁচ দফা দাবি না মানলে নির্বাচনের দিন তাঁরা কেউ ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যাবেন না৷ তার জন্য যা শাস্তি বরাদ্দ হবে, তা মেনে নিতে তাঁরা প্রস্তুত৷ কেবল বিক্ষোভ দেখানোই নয়, শনিবার কমিশনের কাছে গণস্বাক্ষর সম্বলিত দাবিপত্রও পেশ করেন ভোটকর্মীরা৷
[ আরও পড়ুন: অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রায় বাধা, মাকে শ্বাসরোধ করে খুন ছেলের ]
এই প্রথম নয়, এর আগেও এই দাবিতে চেতলা গার্লস স্কুলে বিক্ষোভ দেখান ভোটকর্মীরা৷ হাওড়ার উলুবেড়িয়া, পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া, তমলুক, এগরা, কাঁথি, পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর, ঘাটাল এবং ঝাড়গ্রাম জেলাতেও তুমুল বিক্ষোভ হয়। তাঁদের প্রত্যেকেরই বক্তব্য, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার শিক্ষক রাজকুমার রায়ের পরিণতি আজও ভোটকর্মীদের শিহরিত করে। কেউ সেই পরিণতি চান না। ভোটকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে কারও আপত্তি নেই। কিন্তু নিরাপত্তা না পেলে সে দায়িত্ব পালন করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.