অর্ণব আইচ: পুলিশের কাজে সন্তুষ্ট নন অনেকেই৷ পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ যেমন একাধিকবার উঠেছে তেমনই আবার ওঠে ইচ্ছাকৃত হেনস্তা করার অভিযোগও৷ কিন্তু সব অভিযোগ যে সবার ক্ষেত্রে খাটে না, তা প্রমাণ করলেন দুই পুলিশকর্মী৷ মানবিকতার জেরেই এক দাদা ফিরে পেলেন তাঁর কিশোরী বোনকে৷
শনিবার ভোরে রেড রোডের কাছে এক কিশোরী ঘোরাঘুরি করছিল৷ ওই কিশোরী কেন এমন সাতসকালে দিকভ্রান্তের মতো ঘোরাঘুরি করছে, তা দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের৷ অরুপ মুখোপাধ্যায় এবং রতন সোম নামে দুই পুলিশকর্মী কিশোরীর কাছে যান৷ কী কারণে এভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে সে, তার নাম কী, বাড়ি কোথায় এসব নানা প্রশ্ন করা হয় ওই কিশোরীকে৷ কিশোরী জানায়, ‘‘আমি সুইটি মল্লিক৷ ১৪ বছর বয়স৷ মন্দারমণির বাসিন্দা৷ দিঘার বাসে করে কলকাতায় চলে এসেছি৷ মাসির বাড়ি যাব৷ দাদার আমাকে নিতে আসার কথা৷ ফোন করছি৷ কিন্তু তিনি ফোন ধরছেন না৷ আর আমি রাস্তাও চিনি না৷ তাই এভাবেই এখানে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম৷’’
একথা শুনে ওই দুই পুলিশকর্মী তাঁকে বসতে বলেন৷ সুইটির কাছ থেকে তাঁর মাসতুতো দাদা বান্টি মাইতির ফোন নম্বরও নেন পুলিশকর্মীরা৷ কিশোরীর দাদাকে ফোন করেন কনস্টেবলরা৷ দুই পুলিশকর্মী ফোনে সুইটির দাদার সঙ্গে কথা বলেন৷ পুলিশকর্মীরা কিশোরীর দাদাকে বলেন,‘‘ সুইটি রাস্তা না চেনায় আপাতত তাঁদের হেফাজতে নিরাপদেই রয়েছে৷’’ সন্তোষপুরের বাসিন্দা কিশোরীর দাদা বান্টি৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই বোনকে নিতে আসছেন বলেই জানান তিনি৷ পুলিশকর্মীরা কিশোরীকে অপেক্ষা করতে বলেন৷ সুইটির সঙ্গে কথা বলতে বলতেই তাঁরা জানতে পারেন রাত থেকে কিছুই খাওয়া হয়নি তার৷ দুই কনস্টেবলই কিশোরীকে কেক, রুটি, তরকারি এবং জিলিপিও খাওয়ান৷
খাওয়াদাওয়া সারতে সারতে বেজে যায় প্রায় দশটা৷ এদিকে ততক্ষণে রেড রোডের কাছে চলে এসেছেন কিশোরীর দাদা বান্টি৷ অরূপ এবং রতন নামে ওই দুই কনস্টেবল কিশোরীকে তাঁর দাদার হাতে তুলে দেন৷ বোনকে কাছে পেয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন বান্টি৷ দাদাকে খুঁজে পেয়ে খুশি সুইটিও৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.