সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: নির্বাচনপর্ব চলাকালীনই রাজ্যের প্রায় ৬৫ হাজার
যৌনকর্মীর দীর্ঘদিনের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভোটপ্রার্থীরা। সেই আশ্বাস পেয়ে অবশেষে কলকাতার সোনাগাছি-সহ রাজ্যের প্রায় ৬০ হাজার নিষিদ্ধ পল্লিতে এবারের ভোটে ‘নোটা’ বা কাউকে ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিলেন যৌনকর্মীরা।
এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন নিষিদ্ধপল্লি
সোনাগাছি। এ রাজ্যে নিষিদ্ধপল্লির সংখ্যা ৬০ হাজার। ৬৫ হাজার যৌনকর্মীর সকলেই
দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির সদস্যা। কমিটির মেন্টর ভারতী দে জানান, “আমাদের সমস্যাগুলি বহু বছর ধরে কেউই মেটাননি। তাই আমরা ভোট বাতিলের ডাক দিয়েছিলাম। আমরা পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করে নারী পাচার বিরোধী বহু কাজ করে থাকি। সেই কারণে সেলফ রেগুলেটরি বোর্ডকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিও রয়েছে আমাদের তালিকার মধে্য।” এছাড়াও ইমমরাল ট্রাফিক প্রিভেনশন অ্যাক্ট বা আইটিপিএ বাতিলেরও দাবি তুলেছেন দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি। এই আইনে রয়েছে, যে কোনও নিষিদ্ধপল্লিতে যৌনকর্মীদের গ্রেপ্তার করা যাবে না। কিন্তু খদ্দের এলে তাঁদের গ্রেপ্তার করতে পারবে পুলিশ। ভারতীদেবী জানান, “এই আইনের ফলে যৌনকর্মীদের ব্যবসায় মন্দা নেমে এসেছে।”
আইনে আরও বলা হয়েছে, যৌনকর্মীদের ছেলেমেয়েরা প্রাপ্তবয়স্ক হলে তাঁরা মায়ের রোজগারে নির্ভরশীল হতে পারবে না, স্বনির্ভর হতে হবে। পাশাপাশি নিষিদ্ধপল্লিগুলিতে কোনও ঘর যৌনকর্মীদের জন্য ভাড়া দিতে পারবেন না মালকিনরা। এই আইনও বাতিলের ডাক দিয়েছিল দুর্বার। তাদের দাবি ছিল, যে কোনও যৌনকর্মী ৪৫ বছর বয়স হয়ে গেলেই আর ব্যবসা করতে পারেন না। সেক্ষেত্রে তাদের পেনশন চালুর দাবি তুলেছিল দুর্বার। দাবি ছিল, যৌনকর্মীদের ছেলেমেয়েদের স্কুল, কলেজ ও চাকরির ক্ষেত্রে সরকারি কোটা বেঁধে দেওয়া হোক। যাতে তারা সমাজে স্বীকৃতি পায়। এছাড়াও সোনাগাছিতে সমাজবিরোধী কার্যকলাপ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। নিত্যদিন বেড়ে চলেছে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা। তাতে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য ডিসি থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধির কাছে দরবার করেছিল দুর্বার। তাতেও ফল মেলেনি। তাই এই দাবিও ভোটের আগে পূরণের ডাক দিয়েছিল তারা। সেই দাবিও মেনে নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভোটপ্রার্থীরা।