রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: রাত পোহালেই লোকসভা ভোটের গণনা, ফলপ্রকাশ। আড়াই মাসের নির্বাচন পর্বের এটাই শেষ ধাপ। গণনার শেষে ফল ঘোষণার পরই দলের কর্মীদের মিলবে ছুটি। কিন্তু ভোটগ্রহণের পর গণনাপর্বেও কারচুপির আশঙ্কা করছেন এ রাজ্যের বিরোধীরা। তাই তা নিয়ে দলের কাউন্টিং এজেন্ট ও অন্যান্য বিরোধীদের বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে সিপিএম, বিজেপির তরফে। জানা যাচ্ছে, সোমবার বিকেলে আলিমুদ্দিনে দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে বিশেষ বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেখানে যথাযথ নির্দেশিকা দেওয়া হবে। তবে তার আগেই জেলাস্তরে পৌঁছে গিয়েছে বার্তা। সবকটি বিরোধী দলের তরফেই কড়া নির্দেশ, গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ গণনাকেন্দ্র ছেড়ে বেরবেন না।
লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election 2024) ভোটগ্রহণ পর্ব শেষে এক্সিট পোল সামনে আসার পরই নড়েচড়ে বসেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ইতিমধ্যে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভিডিও কনফারেন্স করে দলীয় কর্মী, এজেন্টদের বলে দিয়েছেন, যতই চাপ আসুক, বিরোধীরা নিজেদের জয়ী বলে দাবি করে মনোবল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করুক, গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনওভাবেই কাউন্টিং সেন্টার ছেড়ে বেরনো যাবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি একুশের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে গণনার কথা মনে করিয়ে দেন। ইভিএমে (EVM)কারচুপি করা হতে পারে বলে সতর্ক করেন কাউন্টিং এজেন্টদের।
অভিষেকের পাশাপাশি সিপিএম রাজ্য সম্পাদক তথা মুর্শিদাবাদের প্রার্থী মহম্মদ সেলিমও (MdSelim)একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। শুধু তাই নয়, ভুয়ো কাউন্টিং অফিসারও থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা তাঁর। সেলিমের সংক্ষিপ্ত নির্দেশ, কোনও গণনাকেন্দ্রে দলের এজেন্টদের ঢুকতে না দিলে প্রতিরোধ করতে হবে। গণনাকেন্দ্রের বাইরে জমায়েত করতে হবে দলের কর্মী, সমর্থকদের। সোমবার স্বচ্ছভাবে গণনার দাবি জানাতে বামেরা আজ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দপ্তরে গিয়েছিলেন বামেদের প্রতিনিধি দল। ছিলেন মহঃ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, শমীক লাহিড়ী, সৃজন ভট্টাচার্য, সায়রা হালিম, তন্ময় ভট্টাচার্য, দীপ্সিতা ধর, সোনামনি টুডু, সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়, সায়ন বন্দ্যোপাধ্য়ায়, সুকৃতী ঘোষাল, নীরব খাঁ, এস এম সাদী, অলোকেশ দাস, জাহানারা খান, বিপ্লব মৈত্র, প্রতীক-উর রহমান, মনোজিত ঘোষ, নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত, নিরাপদ সর্দার, দেবদূত ঘোষ। সেলিম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ”এক্সিট পোল বিজেপির এক্সিট। এসব কিছু নয়। আসল হল ৪ জুন, গণনার দিন। ওইদিন যাতে কেউ ভুয়ো পরিচয়পত্র নিয়ে এজেন্ট সেজে গণনাকেন্দ্রে ঢুকে না, যাতে বেশি জমায়েত না হয়, সেসব দিক খতিয়ে দেখতে কমিশনকে অনুরোধ করেছি।”
অন্যদিকে, গণনা নিয়ে বিজেপিও (BJP) একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছে। চার ধাপে ভাগ ভাগ করে রবিবার জেলা সভাপতি, প্রার্থী, কেন্দ্র ভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিয়ে ভারচুয়াল বৈঠক করেন বিজেপি নেতৃত্ব। প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সেখানে। জেলাস্তরে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রত্যেক রাউন্ডের পরে হিসাব মিলিয়ে নিতে হবে। কোনও গুজবে কান নয়, গণনাকেন্দ্রের (Counting Centre) টেবিল ছাড়লে হবে না। এও বলা হয়েছে যে গণনার মাঝেই কানে আসতে পারে, ‘অমুক আসনে তৃণমূল জিতে গিয়েছে, এখানেও জিতে যাবে, এখানে থেকে কী হবে?’ এসব শুনে গণনাকেন্দ্র ছাড়া যাবে না। এজেন্টদের মধ্যে কো-অর্ডিনেশন বজায় রাখতে হবে। ভয়ের বাতাবরণ সৃষ্টি হলে সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশন আধিকারিকদের জানাতে হবে। কোনও সন্দেহ হলে পুনরায় গণনার দাবি জানাতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.