গোবিন্দ রায়: নিজের সঙ্গীকে খুঁজে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তরুণী। কিন্তু তাঁর সঙ্গী কোনও পুরুষ নন, বরং মহিলা। আসলে সমকামী যুগলের প্রেম, লিভ টুগেদারের মাঝে প্রাচীর এখন পরিবার। কিন্তু তরুণীকে ‘সুবিচার’ দিতে অপারগ আদালত! সমকাম এ দেশে অবৈধ না হলেও, সমকামী বিয়ে নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার। সুপ্রিম কোর্টও শোনায়নি কোনও রায়। তাই সমকামী যুগলের প্রেম, ভালোবাসা বাধা পরে গিয়েছে আইনের ফাঁকে।
কলকাতা সেক্টর ফাইভের বাসিন্দা অস্মিতা বিশ্বাস (নাম পরিবর্তিত) শারীরিকভাবে মেয়ে হলেও মনের দিক থেকে তিনি পুরুষ। বর্ধমানের বাসিন্দা সুদীপা মল্লিকের (নাম পরিবর্তিত) সঙ্গে অস্মিতার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁদের এই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে সুদীপার বাবা তাঁকে গৃহবন্দি করে রাখেন বলে অভিযোগ। এর পর বাড়ি থেকে পালিয়ে কলকাতায় বাগুইআটি থানা এলাকায় থাকতে শুরু করেন দুই তরুণী।
মেয়ের খোঁজ না পেয়ে গত ৫ আগস্ট সুদীপা বাবা বর্ধমান জেলা পুলিশের কাছে অপহরণের অভিযোগে মামলা রুজু করেন। তাঁর অভিযোগ, এক মহিলা তাঁর মেয়েকে প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছে। সুদীপা অবসাদগ্রস্ত, বর্তমানে তাঁর চিকিৎসা চলেছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। কলকাতার কোনও হোটেলে মেয়েকে আটকে রাখা হয়েছে বলেও দাবি ছিল তাঁর। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বর্ধমান জেলা পুলিশ কলকাতা থেকে ১৬ আগস্ট সুদীপাকে উদ্ধার করে। এর পরই ‘সুবিচার’ চেয়ে অস্মিতা বিশ্বাস কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর আইনজীবী জানায়, সুদীপা বর্ধমান মহকুমা আদালতে গোপন জবানবন্দি দিয়ে জানায় তিনি অস্মিতার সাথেই থাকতে চান।
বিচারপতি তাপব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি পার্থ সারথি চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে অ্যাডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর দেবব্রত চট্টোপাধ্যায় আদালতে কেস ডায়েরি জমা দিয়ে জানান, নিম্ন আদালতে সুদীপা ও সুস্মিতা একসঙ্গেই ছিলেন। বর্তমানে তিনি নিজের ইচ্ছেমতো যেখানে খুশি থাকতে চান। সেই কারণে নিম্ন আদালতে তাঁকে মুক্তি দেন। সুদীপা মল্লিক তাঁর বাবা মায়ের কাছে ফিরে যান। এখন তাঁর বাবা-মা জোর করে তাকে আটক করে রাখেনি। তাই হাই কোর্টে এই মামলা গ্রহণযগ্যতা নয়। মামলা খারিজ করে দেওয়া হোক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.