রমেন দাস: ঠাকুর ঘরে কে! যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং রামমন্দির উদ্বোধনের আবহে ফের প্রকাশ্যে বাম, অতিবাম ছাত্র সংগঠনের দ্বন্দ্ব! অভিযোগ, বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের দেওয়া বিজেপি-আরএসএস বিরোধী পোস্টারই নাকি ছিঁড়েছে এসএফআই (SFI)।
দাবি, ১৯ জানুয়ারি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University) ক্যাম্পাসের ছাত্রসংসদ অফিসের দেওয়াল এবং ক্যাম্পাসজুড়ে পোস্টার লাগায় যাদবপুরের এআইএসএফ (AISF), এআইএসএ (AISA) -সহ একাধিক বামপন্থী ছাত্র সংগঠন। ওই পোস্টারে বিজেপি (BJP) বিরোধী মন্তব্য ছিল বলে দাবি। অভিযোগ, ফ্যাসিবাদ বিরোধী ওই পোস্টার বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র সংগঠন, এসএফআইয়ের সদস্যরা ছিঁড়ে দেন। যে সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে বলেও দাবি।
এআইএসএফের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক জ্যোতির্ময় সেনের অভিযোগ, “ফ্যাসিবাদ বিরোধী। দলিতের জন্য লড়াই। বিজেপি, আরএসএসের ধর্মীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি আমরা। সেদিন মার খেয়েছি পুলিশের হাতেও। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, আমাদের ভ্রাতৃত্বসুলভ সংগঠন এসএফআই এই অন্যায় করেছে! পোস্টার সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ক্যাম্পাস থেকে। তাহলে কীভাবে লড়াই চলবে? ওই ছাত্র সংগঠন কি এটাই চায়, অন্য সংগঠনের পোস্টার ছিঁড়ে নিজেদের ক্ষমতা জাহির করতে?” জ্যোতির্ময়দের সুরেই এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন এআইএসএ-র ছাত্র প্রতিনিধিরা। এমনকি ওই বামপন্থী ছাত্র সংগঠনকে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি করা হয়েছে।
কিন্তু অভিযোগ প্রায় না উড়িয়েই পালটা সরব হয়েছে এসএফআই-ও। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (আঞ্চলিক কমিটি) এসএফআই সভাপতি তমোলিনা ঘোষের দাবি, ”ইউনিয়ন রুমের গণতান্ত্রিক পরিসরকে রক্ষা করতে ইউনিয়ন রুমে সাধারণত কোন নির্দিষ্ট সংগঠনের পোস্টার লাগানো হয় না, সেই জায়গা থেকে এসএফআইও নিজের পোস্টার সেদিন খুলেছে, যা ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে না। এই ভিডিও ফুটেজ কীভাবে প্রকাশিত হচ্ছে এবং কাদের মদতে হচ্ছে, তা দেখা হবে।”
যদিও দুই বাম ছাত্র সংগঠনের এমন দ্বন্দ্বে পালটা কটাক্ষ ছুঁড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) নেতা সঞ্জীব প্রামাণিক। তাঁর দাবি, “বাইরে অর্থাৎ সংসদীয় রাজনীতিতে রাম-বাম যে ভাই-ভাই, তা আরও একবার প্রমাণিত। ক্য়াম্পাসের ভেতরেই অন্য সংগঠনের পোস্টার ছিঁড়ে সেটাই প্রমাণ করে দিয়েছে এসএফআই। মনের সুপ্ত বাসনা আসলে, বিজেপির সঙ্গে থাকা!”
বাম, অতিবামের দ্বন্দ্বে কী বলছেন এবিভিপি-র (ABVP) নেতারা? ওই ছাত্র সংগঠনের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি নিখিল দাসের দাবি, “এরা আগে নিজেরাই ঠিক করুক কী করবে। জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে নারদ-নারদ যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি! সারাবছর নিজেদের সদস্য বাড়ানোর লড়াই। ক্ষমতা জাহিরের লড়াই করে। প্রায় একই নীতি, আদর্শের কথা বলেও লড়াই। ভোটের সময় অন্যরকম। হাস্যকর লাগছে এসব দেখে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.