রাহুল চক্রবর্তী: বছর সাতেক আগেও এ বাংলায় যে দৃশ্য কল্পনা করা যেত না। সেই অকল্পনীয় ঘটনাই ঘটছে বঙ্গ রাজনীতিতে। সোমবার প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরে উদ্বোধন হয়ে গেল গান্ধীজিকে নিয়ে এক প্রদর্শনীর। এবছর গান্ধীজির জন্মের সার্ধশতবর্ষ পালন করছে ভারত। সেই উপলক্ষে ২ অক্টোবরের কয়েকদিন আগেই প্রদেশ দপ্তরে মহত্মাকে নিয়ে প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়ে গেল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিন প্রথমবার প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরে পা রাখলেন বামফ্রন্টের শীর্ষ নেতৃত্ব। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা নরেন চট্টোপাধ্যায়, সিপিআই নেতা মঞ্জুকুমার মজুমদার, আরএসপি নেতা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকেই এদিন উপস্থিত ছিলেন বিধান ভবনে।
‘বাংলার বাপু’ শীর্ষক এই চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। উদ্বোধন মঞ্চে সোমেন বলেন,বহুত্ববাদের ভিত্তিভূমি এই ভারতবর্ষে ‘গান্ধী চর্চা’ আজ যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষে সারা বছর ব্যাপী প্রদেশ কংগ্রেস কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলেও উল্লেখ করেন সোমেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সুরেই কথা বলেন বিমান বসু। তিনি বলেন, বহুত্ববাদের প্রসারে এবং সাম্প্রদায়িক হানাহানি রুখতে গান্ধীর ভূমিকা চিরস্মরণীয়। এদিন প্রদেশ দপ্তরে দীর্ঘক্ষণ গান্ধীজির মতাদর্শ নিয়ে আলোচনা হয়। সভা শেষে সটান প্রদেশ সভাপতির ঘরে ঢুকে যান বাম নেতারা। দীর্ঘক্ষণ চা-চক্রে খোশগল্প চলে দুই শিবিরের নেতাদের মধ্যে। যা রাজ্য রাজনীতির নিরিখে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
পুজোর পর থেকেই রাজ্যব্যাপী যৌথ আন্দোলনে নামছে বাম ও কংগ্রেস। রাজ্যের তিন আসনের উপনির্বাচনেও একসঙ্গে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই শিবির। এমনকী, আসন সমঝোতাও চূড়ান্ত। স্বাভাবিকভাবেই আগামীদিনে বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই দুই শিবির যে যৌথ আন্দোলনে যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিন, প্রদেশ দপ্তরে সেই বৃহত্তর জোটেরই বীজ বপন হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এতদিন, সিপিএম এবং কংগ্রেস নেতারা জোটের ব্যপারে এক্যমত থাকলেও, কিছুটা আপত্তি ছিল বাম শরিকদের। সেজন্যই এদিন, প্রদেশ দপ্তরে বামেদের ছোট শরিকদলগুলি উপস্থিত থাকাটা বাড়তি তাৎপর্যপূর্ণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.