সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে বাম-কংগ্রেসের জোট ভেঙে গেল। একা লড়ার কথা ঘোষণা করে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। ৪২টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা রাতেই দিল্লিতে চলে গিয়েছেন তিনি। আজ, সোমবার বৈঠকে বসছে এআইসিসি-র নির্বাচনী কমিটি। দুপুরে এ রাজ্যে প্রথম তিনটি পর্যায়ে কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতে পারে বলে খবর।
[ ভোটারদের হুমকি দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী, অভিযোগে সরব তৃণমূল]
কিন্তু কথাবার্তা তো অনেক দূরই এগিয়েছিল। তাহলে শেষপর্যন্ত কংগ্রেস ও বামেদের জোট হল না কেন? প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের অভিযোগ, কংগ্রেসের বক্তব্যকে কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না সিপিএম। উলটে তাদের আসনে প্রার্থী দিয়ে দিচ্ছে। এই অবস্থায় জোট করা ‘অসম্মানের’। তাই কংগ্রেস একা লড়বে। জানা গিয়েছে, বাম শরিক ও আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের কিছু নেতার জন্য ‘অপমানিত’ বোধ করেছিলেন সোমেন। তার জেরেই এই পরিণতি। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, একা লড়ার কথা ঘোষণা করে সোমেন আসলে সিপিএমের উপর প্রবল চাপ তৈরি করলেন। যাতে তারা নমনীয় হতে বাধ্য হয়। কারণ, রাজ্য রাজনীতিতে এখন যা পরিস্থিতি, তাতে নিজের শক্তিতে কংগ্রেস যদিবা নিজের শক্তিতে এক আধটা আসন জিততে পারে। কিন্তু তাদের সমর্থন ছাড়া সিপিএমের পক্ষে একটি আসনে জেতার কাছাকাছি পৌঁছনোরও ক্ষমতা নেই। তাই কৌশলে বল বামেদের কোর্টের ঠেলে দিলেন ধুরন্ধর সোমেন।
আসনরফা যে হচ্ছে না তা রবিবার বিকেলেই স্পষ্ট হয়ে যায় দু’দলের কাছেই। রায়গঞ্জে মহম্মদ সেলিমের প্রচারে গিয়ে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, “কংগ্রেসের জন্য দীর্ঘকাল অপেক্ষা করা সম্ভব নয়। কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই রায়গঞ্জে মহম্মদ সেলিমকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল। এই অবস্থায় এখন কংগ্রেসকেই ঠিক করতে হবে তারা কী করবে।” তবে আসনরফা না হলেও কংগ্রেস সম্পর্কে জোটপন্থীরা যে এখনও নরমপন্থী তা সূর্যকান্ত মিশ্রর বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, “কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের লড়াই নয়। বিজেপি এবং তৃণমূলকে ভোটে পরাস্ত করাই আমাদের লক্ষ্য। তবে কংগ্রেস প্রার্থী দিলে আমাদের কিছু করার নেই।” এদিন বাম শরিকদের ভূমিকা নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও প্রার্থী ঠিক করা থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে সামগ্রিকভাবে আলিমুদ্দিন নেতৃত্বের উপরই দায় চাপিয়েছেন সোমেন মিত্র। তাঁর কথায়, “বীরভূম বা দার্জিলিং কেন্দ্রটি আমাদের দেওয়া হবে বললেও ওরা প্রার্থী ঠিক করে দেবে, এমন ঘটনা মানা যায় না। এটা সংকীর্ণ মানসিকতা।” সিপিএমকে কটাক্ষ করে সোমেন মিত্রর প্রশ্ন, “এটা কি জোটের নমুনা? আমরা ৪২ কেন্দ্রেই প্রার্থী দেব।” জোট বা আসন রফা না হওয়ার কারণ হিসাবে বিগত বিধানসভা ভোটের প্রসঙ্গও টেনে এনেছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে , ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে সিপিএম। আসন সমঝোতা করে একমঞ্চে প্রচারে গেলেও ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেস সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছে সিপিএম।
[ স্পর্শকাতর বলে রাজ্যকে অপমান করা হচ্ছে, কমিশনে নালিশ সুবোধ-অরিন্দমদের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.