রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কলকাতা সফরের সময় তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাবে বাম ছাত্র সংগঠন। সেই কর্মসূচিতে শামিল হবে সিপিএম-সহ বামপন্থী দলগুলিও।বৃহস্পতিবার আলিমুদ্দিনের এক সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম এই কর্মসূচির কথা জানান। তিনি বলেন, “প্রায় এক দেড় মাস আগে প্রধানমন্ত্রীর কলকাতা সফরের সময় যেভাবে তাঁকে বিক্ষোভ দেখানো হয় সেই পন্থাই অবলম্বন করা হবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের সময়ও।”
১১ জানুয়ারি কলকাতায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য প্রায় টানা ২৪ ঘণ্টা অচল ছিল কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা। কালো পতাকা, মাস্ক পরে, কালো বেলুন দিয়ে প্রতিবাদ করা হয়। সেই আন্দোলনের নেপথ্যে ছিল বাম সংগঠন। এবারেও তাঁরা চান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শহিদ মিনারের সভায় সিএএ নিয়ে প্রচারে এলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে। দিল্লির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপিকে দায়ী করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরকে ঘিরেই বামেদের এই বিক্ষোভের কর্মসূচি। প্রধানমন্ত্রীকে বিক্ষোভ দেখানোর ছকেই তারা রবিবার অমিত শাহের সভা ভণ্ডুল করতে আহ্বান জানায় সকল বাম ছাত্র-যুব সংগঠনকে।
এদিন বামেদের সঙ্গে জোট সঙ্গী হয়ে বিমানবন্দর ও শহিদ মিনারে কালো পতাকা দেখানোর পরিকল্পনা নেয় কংগ্রেসও। তবে বাম ও কংগ্রেসের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিকে আমল দিতে নারাজ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “বামপন্থীদের কাজই হচ্ছে বিক্ষোভ দেখানো। ছোটবেলা থেকে ওদের বিক্ষোভই দেখে আসছি। বামপন্থীদের নেতিবাচক দেশবিরোধী রাজনীতি বাংলার মানুষ মেনে নেবে না।” উল্লেখ্য, আগামী ১ মার্চ শহিদ মিনার ময়দানে সিএএ-র সমর্থনে সভা করবেন অমিত শাহ। এখনও পর্যন্ত খবর, অমিত শাহ ১ মার্চ সকালে আসবেন। শহিদ মিনারে সভা। কালীঘাট মন্দিরে পুজো দেবেন। দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন। রাতে দিল্লি ফিরবেন। বামেদের এই বিক্ষোভের হুঁশিয়ারিকে ঘিরে শাহর কলকাতা সফর নিয়ে ক্রমশ চড়ছে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ।
দিলীপ ঘোষের অবশ্য কটাক্ষ, “বামপন্থীদের ছাত্র সংগঠন, তাদের আবার বিক্ষোভ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটের ফলই বলে দিয়েছে, বামপন্থীরা আর পশ্চিমবঙ্গে চলবে না।” বুধবার আলিমুদ্দিন থেকে সিপিএম নেতৃত্ব দিল্লি হিংসার ঘটনাকে গুজরাটে ২০০২ সালের গণহত্যার সঙ্গে তুলনা করেছে। সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিমের অভিযোগ, “একই ধাঁচে আগে থেকে পরিকল্পনা করে এই ঘটনা হয়েছে। বিজেপিকেই এর দায় নিতে হবে।” নিজের করা অভিযোগের সপক্ষে সেলিমের সওয়াল, আদালতই প্রশ্ন তুলেছে তিন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে কেন এফআইআর করা হবে না। আর যে বিচারপতি এই প্রশ্ন করেছিলেন, কেন্দ্র রাতের অন্ধকারে তাঁকে বদলি করে দিল। যদিও কলেজিয়ামই এই কাজ করেছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা আছে বলে মন্তব্য সেলিমের।
দিল্লি হিংসার সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেও কিছু করেনি। পাশাপাশি কলকাতায় অমিত শাহের সভার অনুমতি দেওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারেরও সমালোচনা করেন সিপিএমের এই শীর্ষ নেতা। দিল্লি হিংসা নিয়ে দিলীপ ঘোষের সাফাই, “সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর উপদ্রবকারীদের ঠান্ডা করেছিল। দিল্লিতেও সবাইকে ঠান্ডা করবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শান্ত হয়ে যাবে দিল্লি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.