শুভঙ্কর বসু: একুশের কমবয়সি সন্তানের মদে আসক্তি দূর করতে দায়িত্ব নিতে হবে বাবা-মাকেই। আইন করে বা পুলিশ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না। শুধু বাবা-মা নয় একাজে এগিয়ে আসতে হবে পাড়ার বড়দেরও। বাবা-মার স্নেহ ভালবাসা এক্ষেত্রে সন্তানকে সঠিক দিশা দেখাতে পারে। মদের দোকান ও বারে একুশের কমবয়সিদের মদ বিক্রি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের হওয়া একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে এমনটাই পর্যবেক্ষণ প্রধান বিচারপতির টি বি রাধাকৃষ্ণণের ডিভিশন বেঞ্চের। মামলার রায়ে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, “বিষয়টি শুধুমাত্র পুলিশের উপর ছেড়ে দেওয়া যায় না। নাবালকরা যাতে মদের দোকান পর্যন্ত পৌঁছতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে বাবা-মা কিংবা পাড়ার বড়দের।”
অভিযোগ, একুশের কমবয়সিদের মদ বিক্রি নিষিদ্ধ জেনেও আইন ভাঙছে একদল ব্যবসায়ী। ফলত মদে সহজেই আসক্ত হয়ে পড়ছে যুবা প্রজন্ম। কলকাতা তো বটেই রাজ্যের সর্বত্র এমনটা হচ্ছে। এমন অভিযোগ জানিয়ে নির্দিষ্ট এক মদ ব্যবসায়ীকে টার্গেট করে সম্প্রতি প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন আরেক মদ ব্যবসায়ী।মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ বুঝতে পারে বাদি-বিবাদি দু’পক্ষের ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই এই মামলা। সেই ব্যবসায়িক সমস্যার প্রসঙ্গ সরিয়ে রেখে মামলায় বৃহত্তর স্বার্থে রায় দিয়েছে আদালত। একুশের কমবয়সিদের সংযত করতে যেমন গুরুজনদের দায়িত্ব দিয়েছে কোর্ট, তেমনই মদ ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে শেষ সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
কড়া ভাষায় আদালত জানিয়ে দিয়েছে, ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতার বিষয়টি মদ ব্যবসায় খাটে না। এটা তাদের মৌলিক অধিকারের পর্যায়ে পড়ে না। নাবালকদের মদ বিক্রির পিছনে ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতাও অন্যতম কারণ। এমনটা বন্ধ করতে আদালতের নির্দেশ ভবিষ্যতে কোনও অফ-শপ বা বার থেকে একুশের কমবয়সিদের মদ বিক্রির ঘটনা সামনে এলে তৎক্ষণাৎ পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর মদ বিক্রির লাইসেন্স বাতিল করতে যাবতীয় ব্যবস্থা করবে আবগারি দফতর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.