সিপিএমের পার্টি চিঠিতেই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পার্টি সদস্যদের একাংশ দলীয় মুখপত্র কেনেনই না। দলের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে চাঞ্চল্য বঙ্গ সিপিএমে (CPIM)। উপার্জনশীল পার্টি সদস্যদের একাংশ দলীয় মুখপত্র ‘গণশক্তি’—র (Ganashakti) গ্রাহকই নন। সিপিএমের পার্টি চিঠিতেই এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এই প্রবণতাকে দুর্বলতা বলে চিহ্নিত করে, কেন তা অতিক্রম করা যাচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্নও তোলা হয়েছে চিঠিতে।
পার্টি চিঠির রিপোর্টে এটা প্রকাশ হওয়ার পর সিপিএমের অভ্যন্তরে বিষয়টি নিয়ে চর্চাও শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, পার্টি সদস্যদের একাংশের দলের প্রতি আনুগত্য নিয়েও। পার্টি চিঠির ১১ পৃষ্ঠায় পার্টি পত্রিকা সম্পর্কে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গণশক্তি—সহ অন্যান্য পার্টি পত্রিকার প্রচার সংখ্যা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে সমগ্র রাজ্যে কিছুটা হলেও সাফল্য অর্জন করা গিয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। উপার্জনশীল ও দৈনিক পত্রিকা ক্রয় করতে সক্ষম এমন সদস্যদের একাংশ পত্রিকার গ্রাহক নন। কেন এই দুর্বলতা অতিক্রম করা যাচ্ছে না? নিজেদের অভ্যন্তরেই উত্তর খুঁজতে হবে। পার্টির পুস্তিকা ও পত্রিকার ক্ষেত্রে বকেয়ার পরিমাণ যথেষ্ট উদ্বেগজনক।’
সিপিএমের রাজ্যনেতাদের একাংশ মনে করছে, পার্টি সদস্যদের একটা বড় অংশই যদি দলীয় মুখপত্র পড়ার ক্ষেত্রে আগ্রহী না হন, তা হলে পার্টি লাইন সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সদস্যদের কোনও ধারণাই তো থাকবে না। পার্টির বিভিন্ন কর্মসূচিতে শীর্ষনেতারা কোথায় কী বলছেন, রাজনৈতিকভাবে কোন ইস্যুতে পার্টির অবস্থান কী, তা দলীয় মুখপত্রে বিস্তারিতভাবে জানা যায়। সিপিএমের মতো পার্টিতে মুখপত্রের খবর বা নিবন্ধ পড়ে পার্টি সদস্যরা সমৃদ্ধ হন। সিপিএমের মতো শৃঙ্খলাবদ্ধ পার্টিতে উপার্জনশীল ও দৈনিক পত্রিকা ক্রয় করতে সক্ষম দলীয় সদস্যদের বড় অংশের মুখপত্রের গ্রাহক না হওয়ার বিষয়টি রীতিমতো উদ্বেগজনক বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, সোশাল মিডিয়ায় পার্টির প্রচারের কাজে প্রতি জেলায় অন্তত ১জন দক্ষ কর্মী নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল বাইশ সালের এপ্রিল মাসে। পার্টি চিঠিতে প্রশ্ন করা হয়েছে, ১৯ মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পর সেই সিদ্ধান্ত কতখানি বাস্তবায়িত হল? উল্লেখ্য, সোশাল মিডিয়ার প্রচারে সিপিএমকে পিছনে ফেলে অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। রাজনৈতিক মহল এমনটাই মনে করছে। বাংলায় সোশাল মিডিয়ার টিমকে নিয়ে সম্প্রতি বৈঠক করে গিয়েছেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। কী কী ইস্যু নিয়ে প্রচার করতে হবে সোশাল মিডিয়ার স্বেচ্ছাসেবকদের, সেটাও নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন শাহ—নাড্ডারা। ফলে সোশাল মিডিয়ায় শক্তিশালী টিম তৈরি করতে না পারলে পদ্মশিবিরের সঙ্গে টক্কর দেওয়া যে মুশকিল, তা ভালই জানেন আলিমুদ্দিনের কর্তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.