অর্ণব আইচ: বহু সোনার দোকানের সিসিটিভির ক্যামেরার মুখ দরজার দিকে নেই। এমনকী, কিছু সিসিটিভির মনিটরে তারিখ ভেসে উঠছে দুই বা তিন বছর আগের। সম্প্রতি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠকে এই অভিযোগ তুলল কলকাতা পুলিশ। একই সঙ্গে কলকাতার সোনার দোকানগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে ব্যবসায়ীদের একগুচ্ছ পরামর্শ দিয়েছেন লালবাজারের পুলিশকর্তারা।
কলকাতার (Kolkata) আশপাশের অঞ্চলে হানা দিচ্ছে ডাকাতরা। গুলি চালিয়ে একের পর এক সোনার দোকানে হচ্ছে ডাকাতি। কলকাতায় এই ধরনের অপরাধ রুখতে শহরজুড়ে টহল দিতে শুরু করেছে লালবাজারের (Lalbazar) বিশেষ টিম। তবু পুলিশের পরামর্শ, ডাকাতির মতো অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নিজস্ব রক্ষাকবচ তৈরি করতে হবে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদেরই। ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠকে লালবাজারের কর্তাদের পরামর্শ, প্রত্যেকটি সোনার দোকানে ব্যাঙ্কের আদলেই অ্যালার্ম সিস্টেম তৈরি করতে হবে। দোকানের একাধিক জায়গায় সেই বোতাম রাখতে হবে। কোনও দুষ্কৃতী ভিতরে প্রবেশ করেছে, তা জানতে পারলেই সঙ্গে সঙ্গে বোতাম টিপে দিতে হবে। তাতে বাইরে বাজবে সাইরেন। টহলরত পুলিশ সতর্ক হবে।
আবার লালবাজারের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকবে অ্যালার্মের। লালবাজারও সংশ্লিষ্ট থানাকে জানাতে পারবে। যদিও সন্দেহজনক কেউ প্রবেশ করার আগে প্রশিক্ষিত সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী যাতে তাদের আটকাতে পারে, সেই ব্যবস্থাও করতে হবে। তার জন্য দোকানে এমন দরজা রাখার পরামর্শ রাখা হয়েছে, যাতে নিরাপত্তারক্ষী রিমোটের মাধ্যমেই একমাত্র দরজা খুলতে পারেন। প্রত্যেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও তাঁদের দোকানের ম্যানেজারদের কলকাতা পুলিশের বন্ধু অ্যাপ ডাউনলোড করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোনও দুষ্কৃতীকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেখলেই তাঁরা যেন বন্ধু অ্যাপে থাকা ‘ডিসট্রেস বাটন’ টেপেন। সরাসরি লালবাজারের পুলিশ আধিকারিকরা জানতে পারবেন যে, ওই ব্যক্তি বিপদে পড়েছেন।
সাধারণত বেশিরভাগ সোনার দোকানেই সিসিটিভি বসানো হয়েছে। কিন্তু লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, সোনার দোকানের সিসিটিভি পরীক্ষা করতে গিয়ে রীতিমতো হতবাক হয়ে যান পুলিশ আধিকারিকরা। তাঁরা দেখেছেন, বহু দোকানেই সিসিটিভির (CCTV) ক্যামেরার লেন্স ভিতরের দিকে। তার ফলে বাইরের গেট থেকে কে ভিতরে ঢুকছে, তা বোঝার উপায় নেই। সেই কারণে পুলিশ ব্যবসায়ীদের জানিয়েছে, সিসিটিভির ক্যামেরার মুখ যাতে সারাক্ষণ দরজার দিকে থাকে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে। আবার দরজার বাইরেও রাস্তার দিকে অন্তত দুটি সিসিটিভির ক্যামেরা বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বেশ কিছু সিসিটিভি পরীক্ষায় ধরা পড়েছে যে, মনিটরে কখনও ২০২২ সাল, কখনও বা ২০২০ সালের তারিখ দেখা যাচ্ছে। আসল সময় ‘অ্যাডজাস্ট’ করেনি দোকান। তার ফলে বোঝা মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে যে, আসলে কবে ঘটেছে এই ঘটনাটি। কোনও ডাকাত যদি ‘রেইকি’ করতেও আগাম দোকানে ঢোকে, তারিখ দেখে তার হদিশ পাওয়াও সমস্যা হবে। এ ছাড়াও যাতে অন্তত এক মাসের সিসিটিভির রেকর্ড থাকে, সেদিকেও ব্যবসায়ীদের নজর দিতে বলেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.